এবার চুড়ান্তভাবেই বদলি করা হয়েছে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও ভেজাল বিরোধী অভিযানের এক সাহসী কর্মকর্তা সারোয়ার আলম। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব করা হয়েছে। আর তাকে বদলি করার মূল কারণ হলো-শেখ হাসিনার এক সময়ের বডিগার্ড হিসেবে পরিচিত পুরান ঢাকার দখল বাণিজ্য ও সন্ত্রাসীদের গডফাদার হাজী সেলিমের বাসায় অভিযান চালানো।
জানা গেছে, হাজী সেলিমের ছেলে ইরফান সেলিমের গ্রেফতার ও তাদের বাসায় অভিযান চালানো ও দীর্ঘদিনের অপরাধ কর্মকাণ্ড নিয়ে সরকারের মন্ত্রী ও আ.লীগ নেতারা মুখ না খুললেও ভেতরে ভেতরে অনেকে ক্ষুব্ধ হয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে যারা হাজী সেলিমের কাছ থেকে মাসে মাসে লাখ লাখ টাকা বকশিস নিচ্ছে তারা সরকারের উপর বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করছে।
আওয়ামী লীগের দুর্নীতিবাজ, চাঁদাবাজ, দখলবাজ নেতাদের চাপের কারণেই র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমকে এখান থেকে সরিয়ে দিতে বাধ্য হয়।
সারোয়ার আলমকে ভেজাল বিরোধী অভিযান থেকে সরিয়ে দেয়ার খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হওয়ার পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ সব জায়গায়ই সমালোচনার ঝড় উঠছে। হাজী সেলিমসহ দুর্নীতিবাজ ব্যবসায়ীদেরকে রক্ষা করতেই সরকার সারোয়ার আলমকে সরিয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ।
এদিকে, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমকে সরিয়ে দেয়ার ঘটনায় প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে র্যাবের কর্মকর্তারা। বর্তমানে র্যাব শেখ হাসিনার গুম বাহিনীতে পরিণত হলেও ভেজাল বিরোধী অভিযানে ভাল ভুমিকা পালন করে যাচ্ছে। সারোয়ার আলমের নেতৃত্বে ভেজাল বিরোধী এই অভিযান সাধারণ মানুষেরও বেশ প্রশংসা কুড়াচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সারওয়ার আলমকে এভাবে বদলির ঘটনা র্যাবের অনেক কর্মকর্তাই মেনে নিতে পারছে না। এমনকি সরকারের এমন সিদ্ধান্তে র্যাবের মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুনও ক্ষুব্ধ হয়েছেন।
সারোয়ার আলম ২০১৫ সাল থেকে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি খাদ্যপণ্যে ভেজাল বিরোধী আন্দোলন ও দুর্নীতি বিরোধী বিশেষ অভিযানের সময় ব্যাপক সাহসী ভূমিকা রেখে আলোচিত হয়েছেন। যুবলীগ নেতা ক্যাসিনো ইসমাঈল হোসেন সম্রাটসহ ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন বড় নেতাদের দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করে সারা দেশে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ার এ কৃতি সন্তান।