বাচনভঙ্গি দূর্বল হবার জন্য যে ছেলেটা স্কুল বন্ধুদের কাছে হাসির পাত্র ছিলো- সেই ছেলেটার বচন শোনার জন্য বিশ্বস্কুল বসে আছে আজ!
যে ছেলেটা জীবনের বড় একটা অংশ জুড়ে ছিলো গাড়ির সেলসম্যান- সেই ছেলেটাই পরিচালনা করার পথে- সমস্ত আমেরিকানদের গনতন্ত্র রক্ষার গাড়ি!
যে ছেলেটার বাবা নিজস্ব বিজনেস হারিয়ে একজন হিটার বা ফারনেস ক্লিনার ছিলো- সেই ছেলেটা পৃথিবীর অন্যতম শক্তিধর দেশের দেশপ্রধান হতে যাচ্ছে!
যে ছেলেটার জীবনেও দারিদ্র্য ছিল, যার দারিদ্রতা তাকে করেছে ধনবান মনের একজন- যে বারবার দারিদ্রকে দিয়েছে ধন্যবাদ- তাকে ধন্যবাদের সাথে গ্রহণ করছে আজ মিলিয়ন মিলিয়ন লোকজন!
যে ছেলেটা মাত্র ২৯ বছর বয়সে সর্বকনিষ্ঠ সিনেটর নির্বাচিত হবার পরের মাসেই ভয়াবহ রোড এক্সিডেন্টে হারিয়ে ফেলেন প্রিয়তমা স্ত্রী এবং প্রিয়তর শিশুকন্যা- যে ছেলেটা এইসকল ধাক্কা সইতে না পেরে চিন্তাও করে-সমাধানটা কেবল আত্মহত্যা, সেই ছেলেটাই হতে যাচ্ছে আমেরিকার ৪৬তম সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট!
তারপর? ঐ যে আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন তার কী হলো? তারপর ছেলেটা অনুভব করলেন- মা হারা সন্তানগুলো তখন তো বাবা হারাও হবে- কী হবে তাদের!
এই ভাবনা থেকেই শুরু সংগ্রামমূখর আরেক গল্প। ছেলেটা সিনেটর হিসেবে শপথ নেন- সেই রুমে দাঁড়িয়ে যেখানে তার ইনজুরড সন্তান শুয়ে আছে। তারপর? তারপর, হয়তো আরও কিছু পর- প্রায় প্রতিদিন অফিশিয়াল কাজ শেষে তিনি চলে যেতেন সন্তানদের কাছে। যারা পরে একটু দূরে থাকতো। প্রতিদিন চার ঘন্টার ট্রেন জার্নি করে তিনি যেতেন তাদের কাছে।এজন্য তার নিকনামই হয়ে যায়- এমট্র্যাক বাইডেন! এমট্র্যাক বাইডেনই দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে পড়তে যেতেন আদরের সন্তানদের মন খারাপ করা দিন..
তারপর? তারপর ব্যক্তিগত সংগ্রামের পাশাপাশি তাঁর রাজনৈতিক সাফল্য ব্যর্থতাও গুটি গুটি পায়ে যেতে থাকে এগিয়ে…
এরপর ভাইস প্রেসিডেন্ট থাকার সময়েই কাঁধে নেয় যে পুত্ররা তাকে মরতে দেয়নি তাদেরই একজনের লাশ! ব্রেইন ক্যান্সার আক্রান্ত হয়ে মারা যান তার ৪৬ বছর বয়সের পুত্র বো বাইডেন।
যে ছেলেটার গল্প এতোক্ষণ; সেই ছেলেটাই সাতাত্তরেও সাহস না হারানো- জোসেফ রবিনেট জো বাইডেন!!
আমার ব্যক্তি জো বাইডেন সম্পর্কে গল্পগুলো বলার কারন হলো- আমাদের সবার জীবনেই ব্যক্তিগত স্ট্র্যাগল থাকে। মূলত এই ব্যক্তিগত স্ট্রাগল গুলো পেরিয়েই পথচলা…
©জাহান রিমা