কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান খান
কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং কুমারখালী উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান খানের সাথে তরুণী এক গৃহবধূর ‘অশ্লীল’ ফোনালাপের অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ায় জেলা জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে। ওই তরুণীর সাথে আব্দুল মান্নান খানের মোবাইলে কথোপোকথনের একাধিক অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়ে যাওয়ার ঘটনায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
এদিকে ওই অডিও ছাড়াও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও কুমারখালী উপজেলা চেয়ারম্যানের সাথে এক সন্তানের জননী ও স্বামী পরিত্যক্তা ওই তরুণীর ঢাকার একটি হোটেলে সময় কাটানোর ছবিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
তরুণী ওই গৃহবধূ কুমারখালী উপজেলার ছেঁউড়িয়া মন্ডলপাড়া এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে। বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করার জন্য গণমাধ্যমকর্মীরা ওই গৃহবধূর সাথে সাক্ষাত করলে, তিনি মুঠোফোনে কথোপোকথনের ওই অডিও ক্লিপগুলো তার এবং মান্নান খানের বলে স্বীকার করেন।
এছাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান খানের সাথে রাজধানী ঢাকার মিরপুর এলাকার একটি হোটেলে একাধিকবার দেখা করার বিষয়টিও স্বীকার করেন ওই তরুণী।
এদিকে, এ ঘটনায় জেলা এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যেও চরম প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
জেলা এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা বলছেন, ‘আব্দুল মান্নান খানের এই নৈতিক স্খলনের বিষয়টি কোনোভাবেই সমর্থন করার মত নয়। এটা চরমভাবে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে। এর দায় মান্নান খানকেই নিতে হবে। আওয়ামী লীগ কোনো অবস্থাতেই এর দায় নেবে না।’
গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে ওই গৃহবধূ জানান, প্রায় দু’বছর আগে প্রতিবেশী মিলন নামের এক যুবকের মাধ্যমে কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের জয়নাবাদ গ্রামের শিক্ষানবীশ আইনজীবী আনিসুর রহমান লালের সাথে তার পরিচয় হয়। পরে আনিসুর রহমান তাকে পরিচয় করিয়ে দেয় কুমারখালী উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান খানের সাথে। এরপর থেকেই তাদের মধ্যে মুঠোফোনে কথোপোকথন শুরু হয়।
আব্দুল মান্নান খানের সাথে তার মুঠোফোনে কথোপোকথনের অডিও কিভাবে ছড়িয়ে পড়লো জানতে চাইলে ওই তরুণী দাবি করেন, আনিসুর রহমান লাল তার মোবাইলের মেমোরি কার্ড বের করে নিয়ে গিয়ে এগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে। ঢাকার হোটেলে অবস্থানের ছবিটিও লালের লোকজন গোপনে ধারণ করে বলে দাবি তার।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলীর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘নৈতিক স্খলন কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায়না। আর কোনো ব্যক্তি বিশেষের অনৈতিক কর্মকাণ্ডের দায় আওয়ামী লীগ বহন করবে না। এর দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকেই বহন করতে হবে।’
এ বিষয়ে কুমারখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান খানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন।