বাইডেন আটকে আছেন যেখানে

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে কে জিতবেন সে বিষয়ে আগাম কোনো সিদ্ধান্তে এখনই আসা যাচ্ছে না। ইতিমধ্যে পাওয়া ফলাফলে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন ২৩৮ এবং রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ২১৩ ইলেকটোরাল কলেজ নিশ্চিত করেছেন। তবে পেনসিলভানিয়া, মিশিগান, নর্থ ক্যারোলাইনা, উইসকনসিনসহ কয়েকটি রাজ্যের ভোট গণনা এখনো শেষ হয়নি।

সুইং স্টেট হিসেবে পরিচিত এসব রাজ্যের ফলাফলে ভর করে দুলছে পেন্ডুলাম।

কে থাকবেন হোয়াইট হাউসে আগামী ৪ বছরের জন্য তা জানতে উৎকণ্ঠা বিশ্বজুড়ে।

জো বাইডেন মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন। দেখে মনে হচ্ছিল তিনি ট্রাম্পের আগেই ২৭০ এর কোটা পূরণ করবেন। তবে বুধবার সকাল থেকে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ফ্লোরিডা, ওহিও এবং টেক্সাস জিতে নেন। নর্থ ক্যারোলিনায়ও তিনি ভালো ব্যবধানে এগিয়ে আছেন।

এদিকে নেভাদায় সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে জো বাইডেন। তিনি এ রাজ্য জিততে যাচ্ছেন বলা যায়। অ্যারিজোনা ও জর্জিয়ার তিনি এগিয়ে আছেন। যদিও এ দুই রাজ্যের ভোট গণনা এখনো অনেক বাকি আছে এবং ট্রাম্পের সঙ্গে তার ব্যবধানও খুব বেশি নয়।

নিউইয়র্ক টাইমস বলছে, যদি বাইডেন অ্যারিজোনা, মিশিগান ও উইসকনসিন জিতে যান তাহলে পেনসিলভানিয়ায় হেরে গেলেও তা পুষিয়ে নিতে পারবেন।

অথবা মিশিগান, উইসকনসিন, প্যানসিলভানিয়া জিতলে বাইডেনের প্রেসিডেন্ট হওয়া নিশ্চিত।

ইতিমধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্প স্থানীয় সময় মঙ্গলবার রাতেই ‘জয়ের খবর’ দেবেন বলে জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার রাত ১২টার কিছু আগে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুকে তিনি লিখেছেন, ‘আজ রাতে আমি বিবৃতি দেব। বড় জয়!’

জো বাইডেনও জয়ের কথা বলছেন।

এদিকে মার্কিন গণমাধ্যমে ফলাফল নিয়ে বিভ্রান্তি কর তথ্য আসছে।

ফক্স নিউজের তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্পের দখলে থাকা অ্যারিজোনায় জিতেছেন বাইডেন। এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে। যদি এ তথ্য নিশ্চিত হয় তবে পুরো ভোটচিত্র বদলে যেতে পারে। তবে অন্য কোনো গণমাধ্যমে অ্যারিজোনা নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলেনি। রিপাবলিকান গভর্নর ডগ ডসি বলেছেন, ফলাফল নিয়ে এখনই কথা বলার সময় আসেনি।

অনেক আগে থেকেই ট্রাম্প ফ্লোরিডায় জিতে গেছেন বলে গণমাধ্যমগুলোতে তুলে ধরা হচ্ছে। নর্থ ক্যারোলাইনা ও জর্জিয়ার ফলাফলও পরিষ্কার করা হয়নি। এখন পর্যন্ত সেখানে ৯৫ ও ৮৫ শতাংশ ভোট গণনা শেষ হয়েছে।

পেনসিলভানিয়া ও জর্জিয়াতে ভোট গণনার হার অনেকটাই ধীর। সেখানে ব্যাপক মেইল ভোট থাকায় পরিস্থিতিও জটিল। ডাকযোগে ভোট আসতে দেরি হওয়ায় ট্রাম্পের লাভ। কারণ এগুলো ডেমোক্র্যাট ভোট হতে পারে। ট্রাম্প নির্বাচনের পর দেরিতে আসা ভোটকে অবৈধ বলেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের ৫০টি অঙ্গরাজ্যের একেক এলাকায় ভোটগ্রহণ শেষ হবে একেক সময়ে। স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টায়  ইন্ডিয়ানা (১১ ইলেকটোরাল ভোট) ও কেন্টাকি (৮) অঙ্গরাজ্যের অনেক কেন্দ্রে ভোট শেষ হয়। এরপর জর্জিয়া (১৬), সাউথ ক্যারোলাইনা (৯), ভারমন্ট (৩) ও ভার্জিনিয়ায় ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল সাধারণত ভোটের রাতেই হয়ে থাকে। ২০১৬ সালে নিউ ইয়র্কের স্থানীয় সময় রাত ৩টার দিকে বিজয় মঞ্চে এসে উল্লসিত সমর্থকদের উদ্দেশে বক্তব্য দিয়েছিলেন ট্রাম্প।

তবে করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে এবারের নির্বাচন পরিস্থিতি অন্যান্যবারের চেয়ে ভিন্ন। কর্মকর্তারা এরইমধ্যে শঙ্কা জানিয়ে বলেছেন, ভোটের ফল পেতে কয়েক দিন এমনকি কয়েক সপ্তাহ দেরি হতে পারে। এর কারণ হিসেবে পোস্টার ব্যালট অনেক বেশি হওয়ার কথা বলেছেন তারা।

যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন গণমাধ্যমের সূত্রে জানা যায়, যুক্তরাষ্ট্রের ইস্ট কোস্ট আর মধ্যভাগে ভোট শেষে প্রাথমিক ফলাফল আসতে শুরু করেছে। এর মধ্যে নিউ নিউ হ্যাম্পশায়ার রাজ্যে জো বাইডেনের জয়ের খবর এসেছে, যেখানে ট্রাম্পের পাল্লা ভারী ছিল। তবে ওহাইওতে তিনি জয় পেয়েছেন।

অ্যালবামা, আরকানস, ইন্ডিয়ানা, ক্যানসাস, কেন্টাকি, লুইজিয়ানা, মিসিসিপি, মিজৌরিসহ ১৭টি রাজ্যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জয়ের আভাস মিলেছে।

নেব্রাস্কা, নর্থ ও সাউথ ডেকোটা, ওকলাহোমা, সাউথ ক্যারোলাইনা, টেনেসি, উটাহ, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া ও ওয়াইওমিংয়েও ট্রাম্প এগিয়ে।

ডেমোক্র্যাট বাইডেন ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্য ধরে রাখতে পারবেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। সেখানে আছে ৫৫টি ইলেকটোরাল কলেজ ভোট। এছাড়া ওয়াশিংটন ডিসি, ভারমন্ট, ডেলাওয়ার ও ম্যারিল্যান্ডে তার জয়ের আভাস মিলেছে।

এছাড়া ম্যাসাচুসেটস, নিউ জার্সি, নিউ ইয়র্ক, কেনাটিকেট, কলোরাডো, কলোরাডো, নিউ হ্যাম্পশায়ার, ইলিনয়, অরিগন এবং ওয়াশিংটন অঙ্গরাজ্যে এগিয়ে আছেন বাইডেন।

এমন আরো সংবাদ

একটি উত্তর দিন

দয়া করে আপনার মন্তব্য লিখুন !
দয়া করে এখানে আপনার নাম লিখুন

সর্বশেষ সংবাদ