যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের কুইন্সের বাসিন্দারা ব্যালট পেপারে বাংলা দেখতে পাচ্ছেন। ঠিক এবারই প্রথম নয়, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগেই হাফিংটন পোস্টের একটি সংবাদ শিরোনাম ছিল, নিউইয়র্ক শহরের বাংলাভাষীরা শেষ পর্যন্ত তাদের নিজেদের ভাষায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোট দিতে পারছেন।
চলুন জেনে নেয়া যাক শুরুর ঘটনা।
যুক্তরাষ্ট্রের ১৯৬৫ সালের ‘ভোটদান অধিকার আইন’ এর আওতায় একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক জনসংখ্যার কোটা পূরণ হলে সেই সব সংখ্যালঘুদের ভাষা ব্যালটে যুক্ত করার বিধান রাখা হয়েছে। তবে, বাংলাভাষীরা কুইন্সে প্রয়োজনীয় সেই সংখ্যাটি পূরণ করলেও ব্যালটে বাংলা সংযোজন করা হয়নি। যদিও ফেডারেল সরকার শহরে ইংরেজী ভাষায় ছাপা ব্যালটকে স্প্যানিশ, চাইনিজ (১৯৯৩ সাল) এবং কোরিয়ান (২০০১ সাল) ভাষায় অনুবাদ করতে নির্দেশ দিয়েছিল।
তাই নিজেদের অধিকার আদায়ে ২০১৩ সালে ‘বোর্ড অফ ইলেকশন’র বিরুদ্ধে ‘ছায়া কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন’ নামের একটি অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ব্রুকলিনের ফেডারেল ডিস্ট্রিক্ট কোর্টে মামলা ঠুকে বসে। অভিযোগে বলা হয়, ২০১২ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বাংলায় ব্যালট সরবরাহের নিশ্চয়তা দিয়েও বোর্ড তা রক্ষা করেনি। ছায়া’র নির্বাহী পরিচালক সীমা আগনানি তখন নিউইয়র্ক টাইমসকে বলেছিলেন, বোর্ডের আমলাতান্ত্রিক পা-টেনে ধরা স্বভাবের কারণে ইংরেজি ভাষায় সামান্য দক্ষ বহু বাংলাভাষী আমেরিকান তাদের ভোটাধিকার পুরোপুরি প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
ফলশ্রুতিতে আদালত নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সের সব ব্যালটে বাংলা সংযোজনের নির্দেশ দেয়। আর এভাবেই নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সের ব্যালটে বাংলা ভাষাও চলে আসে।
শুধু কুইন্স-ই নয়, এবার ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেসের অনেক এলাকার বাংলাভাষীরাও বাংলায় মুদ্রিত ব্যালটে ভোট দেবার সুযোগ পাচ্ছেন বলে জানা গেছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে লস অ্যাঞ্জেলেস প্রবাসী ‘এল এ বাংলা টাইমস’র সিইও, তরুণ উদ্যোক্তা এবং কমিউনিটি এক্টিভিস্ট আব্দুস সামাদ মানবজমিনকে বলেন, বিষয়টি নিশ্চিতভাবে আমাদের জন্য গর্বের।
যে ভাষার জন্য আমরা রক্ত দিয়েছি, জীবন দিয়েছি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ব্যালটে সেই ভাষা দেখতে পারাটা খুবই আনন্দের।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে শুধু বাংলাদেশী অভিবাসীর সংখ্যাই প্রায় আট লাখ মতান্তরে তা দশ লাখেরও বেশি।