রাশিদুল ইসলাম : সৌদি আরবের প্রখ্যাত নারী মানবাধিকার কর্মী লুজাইন আল-হাসুল কারাগারে আমরণ অনশন শুরু করেছেন। ২০১৮ সাল থেকে তিনি কারাগারে আটক আছেন। গত ৩ মাস ধরে তাকে তার স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে দেয়া হচ্ছে না। মিডিলইস্টআই
কারাগারে বন্দী থাকা অবস্থায় লুজাইনকে কোনো ফোন কল রিসিভ করতে দেয়া হয় না এবং পরিবারের লোকজন তার সঙ্গে দেখা করতে পারেন না। এরই প্রতিবাদে লুজাইন অনশন শুরু করেছেন।
তার বোন লিনা ও আলিয়া রয়টার্সকে মঙ্গলবার জানান, সোমবার সন্ধ্যা সাতটা থেকে লুজাইন অনশন শুরু করেছেন। তাকে পরিরবারের লোকজনের সঙ্গে ফোনে কথা বলতে দেয়া হয় না, এমনকি দেখাও করতে দেয় না সৌদি কর্তৃপক্ষ। তার সঙ্গে সরকার খুবই বাজে ব্যবহার করছে।
গত আগস্ট মাসে লুজাইন ছয় দিনের জন্য অনশন করেন। সে সময় তাকে দিনে পরিবারের লোকজনের একটি মাত্র ফোন কল রিসিভ করার অনুমতি ছিল এবং ছয় মাসে দুইজন পারিবারিক সদস্য তার সঙ্গে দেখা করতে পারতেন।
কানাডার ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েট করা ৩১ বছর বয়সী লুজাইনকে আমিরাতে আটক করার পর সৌদি আরবে ফেরত পাঠালে তাকে রিয়াদের আল-হেয়ার কারাগারে রাখা হয়েছে। তিনি নারীদের ওপর থেকে গাড়ি চালানোর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার আন্দোলনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নেত্রী ছিলেন। ২০১৪ সালেও তিনি ৭০ দিনের জন্য আটক হয়েছিলেন।
এ বছরের শুরুতে ব্লুমবার্গ নিউজ জানায় করোনাভাইরাসের কারণে সৌদি কর্তৃপক্ষ কারাগারে আটক বন্দীদের সঙ্গে তাদের স্বজনদের আর আগের মত দেখা করতে দিচ্ছে না। ফলে গত কয়েকমাস ধরে বন্দীদের সঙ্গে তাদের স্বজনরা দেখা করতে পারছেন না।
বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন অভিযোগ করে লুজাইনকে বৈদ্যুতিক শক, চাবুক মারা ছাড়াও যৌন নির্যাতন করা হচ্ছে। গত ১০ মাস ধরে সঠিক বিচারের সুযোগও পাচ্ছেন না তিনি। এসব সংগঠন লুজাইনের নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়ে আসছে। এধরনের এক মুক্তির দাবিতে ১৩’শ মানুষ স্বাক্ষরও করেছেন। তারা বলছেন লুজাইনের মামলায় চূড়ান্ত রায় দেয়ার আগে তাকে কারাগারে নির্যাতন করা হচ্ছে। সন্দেহভাজন হিসেবে তাকে আটক করে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ ছাড়াই এধরনের নির্যাতন সৌদি আইন নয় বরং কর্মকর্তাদের মর্জির ওপর নির্ভর করছে।
এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের উপ-আঞ্চলিক পরিচালক লিন মালোউফ লুজাইনের আটককে লজ্জাস্কর ও ভন্ডামি বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন জি-টুয়েন্টির নেতৃত্ব দিলেও সৌদি আরব নারীদের সমঅধিকারের কথা বলা হলেও দেশটির ক্ষমতায় যারা আছে তারা আড়ালে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে।