সম্প্রতি দেশের রাজনীতিতে চরম বিপাকে আছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। রাজনীতিতে আসা ইমরান পেরিয়ে এসেছেন জীবনের নানা রঙ্গিন অধ্যায়। তবে বর্তমানে তার রাজনৈতিক অস্তিত্ব প্রশ্নের মুখে। ইমরানকে সরাতে রীতিমতো কোমর বেঁধে রাজপথে নেমেছে দেশটির বিরোধী ১১টি রাজনৈতিক দল।
কিন্তু এটাই তো তার একমাত্র পরিচয় নয়। ক্রিকেট থেকে প্রেম-প্রণয়, ক্যাপ্টেনের জীবন সত্যিই বর্ণময়। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতায় এখন সে জীবন প্রায় রংহীন, সাদা-কালোয় এসে ঠেকেছে।
আসুন জেনে নেওয়া যাক তার বর্ণময় জীবন—
১৯৫২ সালে লাহোরে জন্ম ইমরান খানের। উচ্চশিক্ষার পাঠ অক্সফোর্ডে। ক্রিকেটে অভিষেক ১৯৭১ সালে। অবসর ১৯৯২ সালে।
১৯৭৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় বিতর্কিত কেরি প্যাকার সিরিজেও অন্যতম ক্রিকেটার ছিলেন ইমরান। তার পরনের টি-শার্ট তুলেছিল নতুন ঝড়।। বুকে লেখা— ‘বিগ বয়েজ প্লে অ্যাট নাইট’। অর্থাৎ, পুরুষরা রাতেই খেলাধুলা করে।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ব্যাট-বল হাতে অনেক চমকপ্রদ পারফরম্যান্স দেখিয়েছেন। তার হাত ধরেই ১৯৯২ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয় করেছিল পাকিস্তান।
দীর্ঘ ক্রিকেটজীবন থেকে অবসরের পর ১৯৯৬ সালে শুরু রাজনীতি। তেহরিক-ই-ইনসাফ নামে দল গঠন। তবে সাফল্য সহজে মেলেনি। ভোটের লড়াইতে প্রথম জয় ২০০২ সালে।
এর পরও পথ সহজ ছিল না। হতে হয়েছে গৃহবন্দি। হাজতবাসও করতে হয়েছে ২০০৭ সালে। অবশেষে দীর্ঘ টানাপড়েন পেরিয়ে ২০১৮ সালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর আসনে অধিষ্ঠিত হন তিনি। কিন্তু এখন সেই আসনটির টলমলে অবস্থা।
শুধু ক্রিকেট আর রাজনীতি নিয়ে ইমরানের জীবনের সবটা বলা হয় না। ক্রিকেটে অলরাউন্ডার ইমরানের মাঠের ক্যারিয়ারের মতোই বর্ণময় তার মাঠের বাইরের জীবনও। বারবার প্রেমে পড়েছেন, বিতর্কেও জড়িয়েছেন।
সীতা হোয়াইটের সঙ্গে ইমরানের সম্পর্ক নিয়ে বিতর্ক ছিল। এক কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়ে সীতা দাবি করেন মেয়ে ইমরানের ঔরসজাত। ইমরান প্রথম অস্বীকার করলেও পরে ডিএনএ পরীক্ষায় সীতার দাবি সত্য বলে প্রমাণিত হয়।
ইমরানের জীবনে অনেক প্রেমের কথা শোনা গেছে বিভিন্ন সময়ে। একটা সময়ে বলিউড অভিনেত্রী জিনাত আমানের সঙ্গে তার সম্পর্কও বিস্তর আলোচিত হয়েছে।
আমেরিকার বিখ্যাত মডেল ডেনিস ডি লুইসের সঙ্গে ইমরানের সম্পর্ক নিয়েও গুঞ্জন শোনা যায়। ইমরান-ডেনিসের সম্পর্ক একসময় ঝড় তুলেছিল সংবাদমাধ্যমে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সঙ্গে পড়ার সময় পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী বেনজির ভুট্টোর সঙ্গেও ইমরানের প্রেমের সম্পর্কে তৈরি হয় বলে গুঞ্জন ছিল। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে এর সমর্থন কখনও মেলেনি।
ব্রিটিশ অভিনেত্রী স্টিফেন বেকহ্যামের সঙ্গে ইমরানের সম্পর্ক ছিল বলেও এক সময় জানা যায়। তবে এ বিষয়ে ইমরান কখনও কোনও মন্তব্য করেননি।
এখনও পর্যন্ত তিনবার বিয়ে করেছেন ইমরান খান। প্রথম স্ত্রী পাকিস্তানে কর্মরত ব্রিটিশ নাগরিক তথা ইংরেজ ধনকুবেরের কন্যা জেমিমা খান। বিয়ের সময়ে ইমরানের বয়স ছিল ৪২। আর জেমিমার ২১। সেই সংসারে ইমরানের দুটি সন্তান রয়েছে।
জেমিমার সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ২০১৫ সালে ইমরান বিয়ে করেন বিবিসি’র নিউজ অ্যাঙ্কর রেহাম খানকে। তবে সেই বিয়ে এক বছরও টেকেনি। জানুয়ারিতে বিয়ে করে অক্টোবরেই রেহামকে তালাক দেন ইমরান।
তৃতীয় বিয়ে ২০১৮ সালে। আধ্যাত্মিক গুরু হিসেবে পরিচিত বুশরা মানেকাকে বিয়ে করেন তিনি। এরপরই তার জীবনে রাজনৈতিক সাফল্য। সূত্র: আনন্দবাজার