ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে প্রসবের পর মৃত ঘোষণা করা হয় নবজাতককে। পরে দাফন করার সময় হঠাৎ নড়ে উঠে সেই নবজাতক। তাকে আবার ঢামেকের নবজাতক বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে।
শুক্রবার সকালের ঘটনা এটি।
জানা গেছে, ছয় মাস ১৬ দিনের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী শাহীনুর বেগমকে গত বুধবার ঢামেক হাসপাতালের গাইনি বিভাগে ভর্তি করেন স্বামী বাসচালক ইয়াসিন। ঢাকা মেডিকেলের ২১২ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করার পর সেখানকার চিকিৎসকরা শাহীনুরকে দেখেন এবং জানান তার রক্তচাপ অনেক বেশি।
ইয়াসিন জানান, চিকিৎসকদের পরামর্শ ছিল, অনাগত সন্তানটি ডেলিভারি না করালে শাহীনুরের রক্তচাপ কমবে না। চিকিৎসকদের কথায় সম্মতি দেন স্বামী ইয়াসিন। বুধবার রাতেই তাকে লেবার রুমে নিয়ে স্বাভাবিক ডেলিভারির চেষ্টা করা হয়। ডেলিভারি না হওয়ায় তাকে ১১০ নম্বর ওয়ার্ডে রাখা হয়। সেখানে চিকিৎসকরা দুদিন চেষ্টার পরও ডেলিভারি হয়নি।
শুক্রবার ভোরে শাহীনুরের আবার ব্যথা শুরু হয়। এর পর পৌনে ৫টার দিকে কন্যাসন্তানের জন্ম দেন তিনি। চিকিৎসকরা জানান, নবজাতক মৃত অবস্থায় জন্ম হয়েছে।
ইয়াসিন বলেন, এর পর হাসপাতালের আয়া নবজাতককে বেডের নিচে রেখে দেন এবং কোথাও নিয়ে দাফন করার জন্য বলেন।
সকাল ৮টার দিকে ইয়াসিন নবজাতককে আজিমপুর কবরস্থানে নিয়ে যান। সেখানে ১,৫০০ টাকা সরকারি ফি দিতে না পারায় তাদের পরামর্শে রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়।
সেখানে ৫০০ টাকা ফি ও কিছু বকশিশ দেয়ার পর নবজাতকটির জন্য কবর খোঁড়া শুরু হয়। কবর খোঁড়া যখন শেষ পর্যায়ে, তখন নবজাতক নড়ে ওঠে। তার কান্নার শব্দ শুনতে পান ইয়াসিন। এর পর দেখেন বাচ্চাটি নড়াচড়া করছে, কান্নাকাটি করছে।
এর পরই তাকে দ্রুত আবার ঢামেক হাসপাতালে নিয়ে আসেন এবং তাকে চিকিৎসকরা দেখে পরে নবজাতক বিভাগে ভর্তি করেন বলে জানান তার বাবা।
ইয়াসিন বলেন, এটি তার দ্বিতীয় সন্তান। ইসরাত জাহান নামে তার ১০ বছরের আরেকটি মেয়ে রয়েছে। তাদের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার মালঙ্গা গ্রামে। তুরাগ ধউর নিসাতনগর এলাকায় থাকেন তারা। তার স্ত্রী গৃহিণী ও তিনি বিআরটিসি বাসচালক।
চিকিৎসকদের এমন ভুল সিদ্ধান্ত ও পরামর্শে বিব্রত ইয়াসিন।
হাসপাতালের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দায়িত্বশীল সূত্র ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
এ বিষয়ে হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, নবজাতকটি জীবিত আছে, ভালো আছে। তাকে ভর্তি রাখা হয়েছে।’