লিখেছেন বশির আহমদ জুয়েল
সামাজিক কিংবা রাষ্ট্রীয় যে কোন অসংগতিকে জনচোখে তুলে ধরার জন্য সংস্কৃতির বিকল্প নাই। কেননা সংস্কৃতিতে রয়েছে নানা মাধ্যম। যা অন্য কোনো মাধ্যমে নেই বললেই চলে।
পুলিশের হেফাজতে যুবকের মৃত্যু হয়েছে সিলেটে। বন্দরবাজার পুলিশফাঁড়িতে এ ঘটনাটি ঘটেছে। কী অভিযোগ কিংবা যুবক অপরাধী কি না তা বিবেচ্য নয়। বিচারবহির্ভুতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে এটাই মূখ্য।
সিলেটের সাংস্কৃতিক ইতিহাসের স্বর্ণযুগ ছিলো স্বৈরচার বিরোধী আন্দোলনের সময়। ছিলো ১৯৯৬ সালের অসহযোগ আন্দোলনেও। তারপরও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড পরিচালনার মাধ্যমে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে সম্মিলিত নাট্য পরিষদ, সিলেট। করোনাকালীন সময়ে তাদের ‘কল-এর গাড়ি’ কার্যক্রম অবশ্যই প্রশংসনীয়।
নাট্য পরিষদ এর ইতিহাসে হয় তো নানা বিতর্ক কিংবা অনেক প্রশ্নও রয়েছে। পরিষদের সাধারণ সম্পাদকের উপর হামলা পরবর্তীতে হামলাকারীদের সাথে আপোষ মিমাংশা করাটা ছিলো কোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয়ার সামিল। এ নিয়ে পরিষদভুক্ত অনেকেই এখনো ক্ষুব্ধ।
বিচার বহির্ভুত হত্যার প্রতিবাদে সম্মিলিত নাট্য পরিষদ কি প্রতিবাদ করতে পারে? যদি পারে তাহলে অপেক্ষা কেনো? তবে সরকার দলীয় পদপদবীর প্রত্যাশায় পরিষদের দু’একজন নিরব থাকাটাই স্বাভাবিক। তাই বলে অন্যরা কেনো চুপচাপ থাকবে?
সাংস্কৃতিক সংগঠনের নির্বাহী পদে থাকা কোনো ব্যক্তির রাজনৈতিক পদে প্রার্থী বা প্রত্যাশী হওয়াটাও কিন্তু প্রশ্নবিদ্ধ।কেননা শুরুতেই বলেছি, সামাজিক কিংবা রাষ্ট্রীয় যে কোন অসংগতিকে জনচোখে তুলে ধরার জন্য সংস্কৃতি হচ্ছে অন্যতম হাতিয়ার। সুতরাং নিজে সরকার দলীয় সংগঠনের পদ বহন করে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করা নিজের পায়ে কুড়াল মারার সমান। এমন ভুল হয় তো এখন আর কোন পাগলেও করে না বা করবে না।
সংস্কৃতির আকাশ হোক রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত। সংস্কৃতি কথা বলুক সরকার কিংবা রাষ্ট্রের যে কোন বিতর্কিত অধ্যায় নিয়ে। সংস্কৃতি ফিরে পাক তার হারিয়ে ফেলা স্বর্ণযুগ। সময়ের প্রেক্ষাপটে এটাই হোক আগামীর শুভ প্রত্যাশা।