আইনশৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব ছিলো যাদের তারাই একের পর এক আইন লঙ্ঘন করে চলছে। রক্ষকরাই ভক্ষক হয়ে ওঠেছে। আমরা বেতন দিয়ে কোনো খুনি পুষতে চাই না। দুর্নীতিবাজ খুনি পুলিশ সদস্যদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে রায়হান উদ্দিন নামের যুবককে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যার প্রতিবাদে মঙ্গলবার বিকেলে ‘দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’ নামক নাগরিক প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এমনটি বলেছেন।
বক্তারা বলেন, রায়হানকে হত্যার দায়ে প্রধান অভিযুক্ত বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আকবর হোসেনকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়নি। এখন শোনা যাচ্ছে সে পালিয়ে গেছে। আমরা মনে করি, মহানগর পুলিশের উর্ধতন কর্মকর্তারাই তাকে লুকিয়ে রেখেছেন। নিজেদের অপকর্ম প্রকাশ হয়ে যাওয়ার ভয়ে আকবরকে লুকিয়েছেন তারা। নতুবা ব্যারাক থেকে একজন পুলিশ সদস্য কিভাবে পালিয়ে যায়। অবিলম্ভে আকবরসহ এই ঘটনায় অভিযুক্ত সকল পুলিশ সদস্যদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয় এই বিক্ষোভ থেকে।
সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে এই বিক্ষোভ সমাবেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দসহ নানা শ্রেণী পেশার মানুষ অংশ নেন। নিহত রায়হানের পরিবারের পক্ষ থেকে তার মামা এই সমাবেশে অংশ নিয়ে ভাগ্নে হত্যার ন্যায় বিচার দাবি করেন।
সমাবেশে বক্তারা আরও বলেন, কিছু পুলিশ একের পর এক অপকর্ম করে চলছে। বিনাবিচারে হত্যা, সাধারণ মানুষকে হয়রানি, মাদক ও অস্ত্র দিয়ে নিরীহ মানুষকে ফাঁসানো, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে পুলিশের বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন ধরে কিছু পুলিশ সদস্য এসব অপকর্ম চালিয়ে আসলেও তাদের কখনো শাস্তির মুখোমুখি হতে হয় নি। ফলে তারা আরও বেপোরোয়া হয়ে উঠেছে। আজকের রায়হান হত্যা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা এসব অপকর্মেরই ধারাবাহিকতা। তাই এই ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক বিচারের মাধ্যমে পুলিশের ভেতরের অপরাধীদের শিক্ষা দিতে হবে।
আইনজীবী দেবব্রত চৌধুরী লিটনের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন ওয়ার্কাস পার্টি সিলেটের সভাপতি সিকন্দর আলী, দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা’র সংগঠক আব্দুল করিম কিম, আশরাফুল কবির, ইন্দ্রানী সেন সম্পা, ইলেকট্রনিক মিডিয়া জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সজল ছত্রী, দেবাশীষ দেবু, রাজীব রাসেল, নিরঞ্জন সরকার অপু, হিতাংশু কর বাবু, মতিউর রহমান প্রমুখ।
সমাবেশে আবেগতাড়িত কণ্ঠে রায়হানের মামা তরেক আহমদ মিলাদ বলেন, আমার নিরীহ ভাগ্নেকে ধরে পুলিশ মেরে ফেলেছে। তার উপর অবর্ননীয় নির্যাতন চালানো হয়েছে। আমরা এই ঘটনার সুষ্ট বিচার চাই।
বিক্ষোভ কর্মসূচীতে বলা হয়, অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচী দেওয়া হবে।