ধর্ষণ-নিপীড়নের ঘটনায় বিচারের দাবিতে গতকাল শাহবাগে বিক্ষোভ করেছে সম্মিলিত ছাত্র-জনতা।প্রশ্নটি সর্বত্র। নারী অধিকার নেত্রীরা কোথায়? সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের সমালোচনায় মুখর নেটিজেনরা। একের পর এক ধর্ষণ, নারী নির্যাতন। নারীর বিরুদ্ধে মানবতা বিরোধী এ অপরাধ থামছে না কিছুতেই। সিলেটে লোমহর্ষক গণধর্ষনের পর নোয়াখালীতে বর্বর নির্যাতন। ক্ষোভে ফুসছে বাংলাদেশ। অনলাইন থেকে রাজপথ। প্রতিবাদে মুখর হাজার হাজার মানুষ।
শ্লোগান ওঠেছে সবখানে। ধর্ষকদের বিচার চাই।
এই যখন অবস্থা তখন দেশের নারী অধিকার নেত্রী হিসেবে পরিচিতরা রহস্যময় নীরবতা পালন করছেন। রাজপথ বা আদালত কোথাও তাদের দেখা মিলছে না। তাদের এই ভূমিকায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন খোদ হাইকোর্ট। নোয়াখালীর বর্বর ঘটনায় কয়েকজন আইনজীবীর আবেদনে গতকাল কিছু নির্দেশনা দেয় হাইকোর্ট। নারী সংগঠনগুলো এ ব্যাপারে কোনো আবেদন না করায় শুনানিকালে বিস্ময়প্রকাশ করেন উচ্চ আদালত। আইনজীবী জামিউল হক ফয়সাল সাংবাদিকদের জানান, আদালত কয়েকটি নির্দেশনাসহ একটি রুল জারি করেছেন। কয়েকটি অবজারভেশনও দিয়েছেন। তবে আদালত একটি বিষয়ে উষ্মা প্রকাশ করেছেন। আদালত নারী সংগঠনের বিষয়ে বলেন, দেশে এতো এতো নারী সংগঠন। তারা আজ কোথায়? তারা কেনো এ ঘটনার বিচার চেয়ে আদালতের কাছে আসলো না। সত্যিই অবাক হলাম।
কেন নারী সংগঠন বা নারী অধিকার নেত্রীদের এ নীরবতা। খ্যাতিমান রাষ্ট্রবিজ্ঞানী প্রফেসর আলী রীয়াজের এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে এর খানিকটা জবাব মেলে। দীর্ঘ স্ট্যাটাসের একটি অংশে তিনি লিখেছেন, ‘ধর্ষন হচ্ছে পিতৃতন্ত্রের হাতিয়ার’ একথা ততক্ষন পর্যন্ত বহাল যতক্ষন আপনি একে কেবলমাত্র একমাত্রিকে বিবেচনা করবেন, কনটেক্সটকে বিবেচনায় নেবেন না। বাংলাদেশে এটা বোঝার জন্যে আপনার তত্ত্বগতভাবে বিবেচনা করতে হবে না, দেশের ‘নারী অধিকার’ বলে পরিচিত কর্মীদের এক বিরাট অংশের নীরবতা থেকেই বুঝবেন। তাঁরা পিতৃতন্ত্রের বিরুদ্ধে নয় এমন মনে করার কারণ নেই, কিন্ত ক্ষমতার সঙ্গে তাঁদের সম্পর্কের কারনেই এখন তাঁদের নীরবতা। আমি যদি আগ বাড়িয়ে বলি, নীরবতা নয়, এ হচ্ছে মৌনতা। ‘মৌনতা সম্মতির লক্ষণ?