সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ফের সিলেট-লন্ডন-সিলেট রুটে চালু হলো সরাসরি ফ্লাইট। প্রথম দিন সিলেট থেকে ছেড়ে যাওয়া বাংলাদেশ বিমানের বিজি-০০১ নম্বরের ফ্লাইটটির ২৩৮ জন যাত্রীর মধ্যে ১৮২ জন ছিলেন সিলেটের বাসিন্দা। বাকি ৫৬ জন ঢাকা থেকে এসেছেন।
বিমানের সিলেট-লন্ডন সরাসরি ফ্লাইট চালু উপলক্ষে বিমানবন্দর লাউঞ্জে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান বিমানের সিলেট জেলা ব্যবস্থাপক শাহনেওয়াজ মজুমদার।
তিনি জানান, বাংলাদেশ বিমানের অত্যাধুনিক ড্রিম লাইনার-৭৮৭ বিমানটির যাত্রী ধারণ ক্ষমতা বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে ২৬০ ধরা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আগামী ২৫ অক্টোবর থেকে লন্ডন রুটে প্রতি রোববার ও বুধবার দুটি ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। এরমধ্যে বুধবারের ফ্লাইটটি সরাসরি সিলেট থেকে লন্ডন যাবে। আর রোববারের ফ্লাইট সিলেট থেকে ঢাকায় ট্রানজিট দিয়ে লন্ডনে যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী।
প্রতিমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বিমানকে বিশ্বমানের এয়ারলাইন্স হিসেবে গড়তে বদ্ধ পরিকর তারা। এজন্য বিমানকে আধুনিকায়ন করা হয়েছে। নতুন নতুন এয়ারক্রাফট বিমান বহরে যোগ হচ্ছে। বিমানের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণও করা হচ্ছে।
সিলেট-লন্ডন রুটে বিমানের সরাসরি ফ্লাইট চালু হওয়াকে সিলেটবাসীর জন্য প্রধানমন্ত্রীর উপহার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এ ফ্লাইট চালু হওয়াতে এখন সিলেট থেকে লন্ডন, লন্ডন থেকে সিলেট সরাসরি যাতায়াত করা যাবে। এর ফলে প্রবাসীদের যাতায়াত আরও আরামদায়ক হবে।’
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বিমানের সিইও মো. মোকাব্বির হোসেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান এবং বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মফিদুর রহমান।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সালে এ রুটে সরাসরি ফ্লাইট চালুর কিছুদিন পর সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা না থাকায় সেটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে ঢাকা হয়ে এই ফ্লাইট চালু হলেও করোনার কারণে তা বন্ধ হয়ে যায়।
এছাড়া করোনা মহামারির আগে বিমান প্রতি সপ্তাহে লন্ডনে চারটি ও ম্যানচেস্টারে তিনটি করে ফ্লাইট পরিচালনা করতো। ফিরতি ফ্লাইটগুলো সিলেট হয়ে ঢাকায় এসে সরাসরি যুক্তরাজ্যের এই দুটি রুটে আবার যেত। কিন্তু করোনার কারণে যাত্রী কমে যাওয়ায় ১৬ জুলাইয়ের পর বিমানের লন্ডন ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যায়। এক মাস পর ১০ আগস্ট থেকে ঢাকা-লন্ডন রুটে প্রতি সপ্তাহে একটি করে ফ্লাইট চালু করে বিমান।
তবে এই ফ্লাইট ওসমানীতে অবতরণ করতো না। সিলেটের যাত্রীদের বিমানের অভ্যন্তরীণ রুটের ফ্লাইটে করে ঢাকায় এনে ইমিগ্রেশনের কার্যক্রম করানো হতো। লন্ডনে সিলেট অঞ্চলের বিপুল সংখ্যক বাসিন্দা বসবাস করেন। বিমান কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তে যুক্তরাজ্যে বসবাসরত সিলেটের বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দেয়।
পরবর্তী সময়ে গত ৪ আগস্ট বেসরকারি বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে পুনরায় লন্ডন-সিলেট ফ্লাইট চালুর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে ওসমানী বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। যার পরিপ্রেক্ষিতে আজ রোববার (৪ অক্টোবর) থেকে সিলেট-লন্ডন সরাসরি ফ্লাইট চালু হলো।