ডাক অধিদফতরের মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) সুধাংশু শেখর ভদ্র (এসএস ভদ্র)কে সরিয়ে দিতে একমত পোষণ করেছেন সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। গতকাল বুুধবার কমিটির সপ্তম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বারও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে উপস্থিত সংসদীয় কমিটির একজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে ইনকিলাবকে জানান, গ্রামীণ জনগোষ্ঠিকে ডিজিটাল সেবা দেয়ার নামে প্রকল্পের আওতায় শত শত কোটি টাকা লোপাট, অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ক্রয়, ক্রয়কৃত যন্ত্রপাতি অকেজো অবস্থায় ফেলে রেখে র রয়েছে এসএস ভদ্র’র বিরুদ্ধে। মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব তদন্তে প্রমাণিত এসব দুর্নীতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)ও তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চালাচ্ছে। এরই মধ্যে করোনা পজেটিভ নিয়ে ১৪ আগস্ট স্মারক ডাক টিকিট উদ্বোধনের নামে প্রধানমন্ত্রীর সামনে হাজির হন তিনি। অবিশ^াস্য দুর্নীতি এবং মহামারী প্রতিরোধ আইন ভঙ্গের কারণে তার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ডাক, টেলিযোগাযোগ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। কমিটির সভায় সুধাংশু শেখর ভদ্রও উপস্থিত ছিলেন। তাকে সামনে রেখেই ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। এ সময় ডাকের ডিজিকে বিভিন্ন প্রশ্ন করা হলেও তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেন নি। নিরবে শুনেছেন কমিটির কথা। তার অপসারণ প্রশ্নে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী মোস্তফা জব্বারও একমত পোষণ করেন বলে সভা সূত্র জানায়।
এদিকে ডিজিটাল সেবা দেয়ার নাম করে শত শত কোটি লোপাট করেছে ডাক বিভাগের মহাপরিচালক সুধাংশু শেখর ভদ্র। কেনাকাটা থেকে শুরু করে ডিজিটাল পোস্ট সেন্টার স্থাপন,নিজস্ব ইএমটিএস পরিকল্পিতভাবে ধ্বংসের অংশ হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদানের নামে ‘থার্ড ওয়েভ টেকনোলজিস লি:; নামক ব্যক্তি মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে রহস্যময় চুক্তি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে প্রমোট করাসহ সব ক্ষেত্রে তিনি দুর্নীতি ও অনিযমের স্বাক্ষর রাখেন। বহু অস্তিত্ববিহীন ডিজিটাল সেন্টারের বিপরীতে তিনি যন্ত্রপাতি সরবরাহ দেখান। বিপরীতে হাতিয়ে নেন ৫শ’ ৪০ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। এসব বিষয়ে চলতিবছর ফেব্রুয়ারিতে দৈনিক ইনকিলাব একাধিক অনুসন্ধান প্রতিবেদন প্রকাশ খরে। এ প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ডাক, টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। দুটি তদন্তেই অভিযোগের সত্যতা মেলে। ইনকিলাব প্রতিবেদনের ভিত্তিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অনুসন্ধানে নামে। অনুসন্ধান প্রক্রিয়ায় সুধাংশু শেখর ভদ্র এবং প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। যেকোনো সময় এ বিষয়ে দুদক দায়ের করতে পারে মামলা।