ভোরের আলো ডেষ্ক: স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিবহন পুলের গাড়িচালক আব্দুল মালেক ওরফে বাদলকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।সোমবার বিকালে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম।
তিনি জানান, বিভিন্ন অপরাধে জড়িত থাকার কারণে গাড়িচালক আব্দুল মালেককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এর আগে সোমবার অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনের দুটি মামলায় স্বাস্থ্য অধিদফতরের কোটিপতি গাড়িচালক আবদুল মালেকের ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
ঢাকা মহানগর হাকিম শহিদুল ইসলাম এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রুবেল শেখ বলেন, গাড়িচালক মালেককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হয়েছিল। শুনানি শেষে বিচারক দুই মামলায় সাতদিন করে ১৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
এর আগে রোববার দিনগত রাত ১২টার পর র্যাব বাদী হয়ে আবদুল মালেকের বিরুদ্ধে মামলা দুটি করে। এরপর আজ সকালে আদালতে হাজির করে তার বিরুদ্ধে ১৪ দিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ।
গতকাল রোববার ভোরে র্যাব-১ এর একটি দল তুরাগ থানাধীন কামারপাড়ার বামনেরটেক এলাকার বাসা থেকে আবদুল মালেককে গ্রেফতার করে। তার কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগজিন, পাঁচ রাউন্ড গুলি, দেড় লাখ বাংলাদেশি জালনোট, একটি ল্যাপটপ ও মোবাইল জব্দ করা হয়।
র্যাব জানিয়েছে, অবৈধ অস্ত্র, জালনোটের ব্যবসা ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন মালেক। সুনির্দিষ্ট অভিযোগে ভিত্তিতেই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী ড্রাইভার মালেকের ঢাকার বিভিন্ন স্থানে একাধিক বিলাসবহুল বাড়ি, গাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে বলে জানতে পেরেছে র্যাব। জাল টাকার ব্যবসা ছাড়াও তিনি এলাকায় চাঁদাবাজিতে জড়িত।
শুধু তাই নয়, গ্রেফতারের পর বিভিন্ন ব্যাংকে নামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ গচ্ছিত রয়েছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, গাড়ি চালক আব্দুল মালেক দীর্ঘদিন ধরে অধিদফতরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন। বিশেষ করে অধিদফতরের তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ-বদলি বাণিজ্য তার প্রধান কাজ। কোনো কর্মকর্তা যদি আবদুল মালেকের সুপারিশ না শোনেন তাহলে তাকে ঢাকার বাইরে বদলি করাসহ শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার ঘটনা ঘটিয়েছেন একাধিকবার।
কর্মকর্তারা লোকলজ্জার ভয়ে এসব বিষয় কখনও প্রকাশ করেননি। নিজে অধিদফতরের একজন গাড়ির চালক হয়েও আ. মালেক একটি পাজেরো জিপ ব্যবহার করেন। এছাড়া স্বাস্থ্য অধিদফতরের ক্যান্টিন প্রিয় তিনি পরিচালনা করেন। তার রয়েছে তেল চুরির সিন্ডিকেট, স্বাস্থ্য অধিদফতরের যত গাড়ির চালক তেল চুরি করে, তার একটি অংশ তাকে দিতে হয়। এই সিন্ডিকেটের মাধ্যমে তিনি পুরো অধিদফতর নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন।