জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর বিরুদ্ধে মণিপুরীদের কৃষ্টি বিকৃত করার অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ মণিপুরী ছাত্র সমিতি (বামছাস)।
রোববার বামছাস’র সাধারণ সম্পাদক এস কেশোব সিংহ সাক্ষরিত এক বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ইউনেস্কোর একটি রিপোর্টে মণিপুরী (মীতৈ) জাতির কৃষ্টি, সাহিত্য ও ধর্মীয় উৎসব উৎযাপন সম্পর্কে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভুল তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে। সঠিক তথ্য নিয়ে তা সংশোধনের আবেদন জানিয়েছে সংগঠনটি।
বিবৃতিতে বলা হয়, ইউনেস্কো, ঢাকা ও নেশনাল ক্রাফটস কাউন্সিল অব বাংলাদেশ এন্ড সাধনা কর্তৃক প্রকাশিত “আ সেক্টর অব এডভান্সমেন্ট অব সাউথ এশিয়ান কালচার” এ প্রকাশিত রিপোর্টে মণিপুরীদের সম্পর্কে সম্পূর্ণ ভুল তথ্য উপস্থাপনা করা হয়েছে।
উক্ত রিপোর্টে ১. কাং (রথযাত্রা) ২.ঝুলোন যাত্রা ৩. জন্মাষ্টমী ৪. তর্পন ৫. দূর্গাপুজা ৬. মহারাসলীলা ৭. হরিউথান ৮. কালীপূজা ৯. দিপান্বীতা ১০. পৌষ সংক্রান্তি ১১. বসন্ত রাস ১২. হোলি ১৩. বাসন্তীপূজা সহ আরো মোট ১৯টি মণিপুরীদের উৎসবের কথা বলা হয়েছে যেগুলো অমণিপুরী (বিষ্ণুপ্রিয়া) তাদেরই উৎসব বলে চালিয়েছে, যা নিতান্ত ভুল তথ্যই নয়, একটি আইনগত অমার্জনীয় অপরাধ। এ-ই তথ্য প্রদান করে মণিপুরী মীতৈ হিন্দু ধর্মে দিক্ষীত সম্প্রদায়কে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়নি সমস্ত জাতিসত্তাকে বিকৃত করা হয়েছে। অন্যদিকে মণিপুরীদের উৎসব বলতে ১. শজিবু চৈরাউবা ২. লাই হারাওবা ৩. নিঙোল চাকৌবা ছাড়া আর কোন ধর্মীয় উৎসব নেই বলা হয়েছে।
রিপোর্টে থাবল চোংবা এটি মণিপুরী পাঙ্গলদের বলা হয়েছে, তাছাড়াও আরো গুরুতর ভুল তথ্য মণিপুরী জাতি তথা সমগ্র ভারত উপমহাদেশের অনন্য জীবনধর্মী অমর রূপগাথা বাস্তবঘটনা সম্বলিত সাহিত্যকর্ম “খাম্বা থোইবী” অমণিপুরী বিষ্ণুপ্রিয়াদের বলা হয়েছে যা চরম ভুলই নয়, লজ্জাকর ও অপমানজনক। কোনো ধরনের তথ্য উপাত্ত যাচাই বাছাই না করে শুধুমাত্র একক গোষ্ঠীর মুষ্টিমেয় ব্যক্তির তথ্য উপাত্তকে গুরুত্ব প্রদান করাকে বাংলাদেশ মণিপুরী ছাত্র সমিতি (বামছাস) কার্যকরী কমিটি ও উপদেষ্টামন্ডলীদের যৌথ সভায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়।
এছাড়া সংগঠন থেকে বনানী, ঢাকায় অবস্থিত ইউনেস্কো শাখা অফিসে যোগাযোগ করে প্রতিবাদলিপির পাশাপাশি সঠিক ইতিহাস সম্বলিত রেফারেন্স বুক সহ আবেদনপত্র প্রেরণ করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অনতিবিলম্বে উপস্থাপিত ভুল তথ্যগুলো সংশোধন করে সঠিক তথ্য উপস্থাপনের মাধ্যমে বর্নিল এ-ই ঐতিহ্যবাহী মণিপুরী জাতিকে তার আপন স্বমহিমায় সমুজ্জল রাখবেন বলে আশা করেন তারা।