হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুদকের প্রশ্নের মুখে সোনালী ব্যাংকের সদ্য মেয়াদ শেষ হওয়া পরিচালক সুভাষ সিংহ রায় এবং জান্নাত আরা হেনরী। বুধবার সকাল ১০টায় সুভাষ সিংহ রায়কে এবং ১১টায় হেনরীকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়।
অভিযোগ রয়েছে, হলমার্কের ঋণ জালিয়াতিতে এ দু`ব্যক্তিসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যদের সুপারিশ ছিল। আওয়ামীপন্থি হিসেবে পরিচিত সুভাষ সিংহ রায়ের সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে আসা নিয়েও ব্যাপক বিতর্ক দেখা দেয়।
এদিকে জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন দুদকের অনুসন্ধান-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, পরিচালনা পর্ষদে থাকাকালীন সুভাষ সিংহ রায় হলমার্ককে ঋণ পেতে সুপারিশ করেছেন এমন অভিযোগের ভিত্তিতে তাকে জেরা করা হয়।
দুদকের উপ-পরিচালক জয়নুল আবেদীন শিবলীর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের অনুসন্ধান দল তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে।
হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় মঙ্গলবার সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদ্য বিদায়ী ও বর্তমানসহ মোট ১১ পরিচালককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ দেয় দুদক।
যাদের জিজ্ঞাসাবাদের নোটিশ দেওয়া হয় তারা হচ্ছেন- সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য এবং চেয়ারম্যান কাজী বাহারুল ইসলাম, পরিচালক মো: শহিদুল্লাহ মিঞা, সুভাষ সিংহ রায়, জান্নাত আরা হেনরী, কাশেম হুমায়ূন, মো: আনওয়ার শহীদ, এএসএম নাঈম, কেএম জামান রোমেল, সাইমুম সরওয়ার কমল, সত্যেন্দ্র চন্দ্র ভক্ত ও প্রদীপ কুমার দত্ত।
সূত্র জানায়, মাত্র চারজন পরিচালক নিয়ে চলছে ব্যাংকটির বর্তমান পর্ষদ। সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান কাজী বাহারুল ইসলাম, পরিচালক মো: শহিদুল্লাহ মিঞা, এএসএম নাঈম ও প্রদীপ কুমার দত্ত বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন। বাকিদের মেয়াদ চলতি মাসের বিভিন্ন সময়ে শেষ হয়েছে।
হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুদক এ পর্যন্ত ৬২ ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, হলমার্ক গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তানভীর মাহমুদ ও চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম, গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমেদ, সোনালী ব্যাংকের সাবেক এমডি হুমায়ুন কবীর, বর্তমান উপ-ব্যবস্থাপক (ডিজিএম) হেদায়েত উল্লাহ, সবিতা সিরাজ, ব্যবস্থাপক (এজিএম) গোলাম নবী মল্লিক, আশরাফ আলী পাটোয়ারি এবং জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদ উদ্দিন আহমেদ, মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মীর মহিদুর রহমান ও ননীগোপাল নাথ এবং রূপসী বাংলা হোটেল শাখায় কর্মরত জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মিহির চন্দ্র মজুমদার, কর্মকর্তা সাইদুর রহমান ও মো. ওয়াহিদুজ্জামান প্রমুখ।
অভিযোগ রয়েছে, সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তাদের যোগসাজশে হলমার্কসহ ৫টি প্রতিষ্ঠান ৩ হাজার ৬০৬ কোটি ৪৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এর মধ্যে হলমার্ক সোনালী ব্যাংকের রূপসী বাংলা হোটেল (সাবেক শেরাটন) শাখা থেকে ২ হাজার ৬৮৬ কোটি ১৪ লাখ টাকা দেশি-বিদেশি ২৬টি ব্যাংকের ৫৮টি হিসাবে পাচার করে আত্মসাৎ করেছে।