‘সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক পৃথক এসএমভিটি লেনসহ চার লেনে উন্নীতকরণ’ প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। মঙ্গলবার (১ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপারসন শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এক সভায় এর অনুমোদন দেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী, সচিবরা রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে অবস্থিত এনইসি সম্মেলন কক্ষে উপস্থিত থেকে একনেক সভায় অংশ নেন। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সাংবাদিকদের সামনে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, অনুমোদিত প্রকল্পগুলোর মধ্যে ‘সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক পৃথক এসএমভিটি লেনসহ চার লেনে উন্নীতকরণ’ প্রকল্পটিও রয়েছে। এছাড়া আরও ৫টি প্রকল্প মঙ্গলবারের একনেকের সভায় পাস হয়। মোট ৬ হাজার ৬২৮ কোটি ৯৯ লাখ টাকা খরচে ছয়টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে সরকার দেবে ২ হাজার ৭১ কোটি ১০ লাখ এবং বৈদেশিক ঋণ ৪ হাজার ৫৯৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা।
সিলেট থেকে তামাবিল স্থলবন্দরের সংযোগ সড়কের মোট দৈর্ঘ্য ৬৫ দশমিক ৩০ কিলোমিটার। এই সড়ক দিয়ে ভারত থেকে পাথর ও কয়লা আমদানি করা হয়। সড়ক দিয়ে চলে ভারী যানবাহন। তবে দীর্ঘদিন থেকে সড়কটির অবস্থা বেহাল।
২০০০ সালে কুয়েত সরকারের অর্থায়নে সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক সংস্কার করা হয়। দীর্ঘদিন পরে গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি ফোরলেনে রূপ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর (সওজ)। এশীয় অবকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাংক (এআইআইবি) এই সড়ক উন্নয়নে অর্থায়ন করবে।
৬৫ দশমিক ৩০ কিলোমিটার সড়কে মোট প্রস্তাবিত ব্যয় নির্ধারণ করা হয়েছে ৩ হাজার ৫৮৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে ৬১৫ কোটি ৪৮ লাখ টাকা এবং এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেসমেন্ট ব্যাংকের (এআইআইবি) ঋণ থেকে দুই হাজার ৯৭০ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে।
চলতি বছর থেকে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর। চারলেনের উভয়পাশে ধীরগতির যানবাহন চলাচলে লেন থাকবে। এছাড়া পথচারীদের জন্য আলাদা লেন থাকবে উভয়পাশে। এটা এশিয়ান হাইওয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে বিবেচনা করছে সরকার।
পরিকল্পনা কমিশনের কৃষি, পানিসম্পদ ও পল্লী প্রতিষ্ঠান বিভাগের সদস্য (সচিব) জাকির হোসেন আকন্দ গণমাধ্যমকে জানান, সিলেট-তামাবিল মহাসড়ক আলাদা লেনসহ ফোরলেনে উন্নীতকরণ প্রকল্পটি মঙ্গলবারের একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে। প্রকল্পের আওতায় ফোরলেনের এই সড়কটিতে ৩৩২ মিটার দৈর্ঘ্যের ২৩ কালভার্ট, এল টাইপ সসার ড্রেন, ভি টাইপ সসার ড্রেন নির্মাণ করা হবে। ১১৯ মিটার দৈর্ঘ্যের একটি রেলওভার পাস, প্রয়োজন অনুসারে আটটি আন্ডারপাস ও তিনটি ওভারপাস থাকবে। থাকবে আরো অনেক সুবিধা।
মঙ্গলবার একেনেকে অনুমোদন হওয়া অন্য প্রকল্পগুলো হলো- সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের দুটি যথাক্রমে ‘মতলব-মেঘনা-ধনাগোদা-বেড়িবাঁধ (জেড-১০৬৯) সড়ক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ’ প্রকল্প স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের ‘সারাদেশে পুকুর, খাল উন্নয়ন (প্রথম সংশোধন)’ প্রকল্প, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ‘আধুনিক খাদ্য সংরক্ষণ নির্মাণ (দ্বিতীয় সংশোধন)’ প্রকল্প, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ-ডেমরা (ডিএনডি) এলাকার নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন (দ্বিতীয় পর্যায়) (প্রথম সংশোধিত)’ প্রকল্প এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ‘ইউনিয়ন পর্যায়ে মৎস্যচাষ প্রযুক্তি সেবা সম্প্রসারণ (দ্বিতীয় পর্যায়) (দ্বিতীয় সংশোধিত)’ প্রকল্প।