সিলেট নগর ভবনের সামনের মোড়ে নবনির্মিত একটি শোভাবর্ধনকারী কাঠামোতে ‘নগর চত্বর’ নামফলক লাগিয়ে গত রবিবার রাতে তা উদ্বোধন করেছিলেন সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী।
কিন্তু রাত যেতে না যেতেই সোমবার সকালে সেই ফলক তুলে সেখানে সাবেক মেয়র, সদ্যপ্রয়াত বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের নামে ‘জনতার কামরান চত্বর’ নামফলক লাগিয়ে দেন যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা।
সকালে যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে গিয়ে আগের রাতে উদ্বোধন হওয়া ‘নগর চত্বর’ সাইনবোর্ড খুলে ‘জনতার কামরান চত্বর’ লেখা সাইনবোর্ড লাগিয়ে দেন। পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়।
এতে বক্তব্য রাখেন মহানগর যুবলীগের সভাপতি আলম খান মুক্তি, সাধারণ সম্পাদক মুশফিক জায়গীরদার, নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক দেবাংশু দাস মিঠু প্রমুখ।
এদিকে এভাবে রাতে ফলক লাগানো ও দিনে পাল্টানোর ঘটনা সিলেটে ‘টক অব দ্য টাউনে’ পরিণত হয়। এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে চলছে আলোচনা।
এ বিষয়ে দুপুরে সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী দেশ রূপান্তরকে বলেন, “এভাবে গায়ের জোরে নামকরণ হয় না। এজন্য দাপ্তরিক একটি প্রক্রিয়া রয়েছে। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে নামকরণ করতে হয়। আর ‘নগর চত্বর’ নামে যে ফলক লাগানো হয়েছে, এটা কোনো নামকরণ নয়, চত্বরটি ‘সিটি পয়েন্ট’ নামে পরিচিত ছিল। এখন কেবল বাংলায় নগর চত্বর করা হয়েছে।”
যুবলীগ সভাপতি আলম খান বলেন, ‘চত্বরটিকে কামরান চত্বর করতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলরদের কাছে দাবি জানানো হয়েছিল। কিন্তু সিটি মেয়র ও বিএনপি নেতা আরিফুল হক চৌধুরী রাতের আঁধারে নগর চত্বর নামফলক লাগান। এতে হতাশ ও ক্ষুব্ধ হয়ে আমরা তা তুলে ‘জনতার কামরান চত্বর’ নামফলক লাগাই। এটি যদি পরিবর্তন করা হয় তাহলে আমার আন্দোলন শুরু করব।’
সিটি করপোরেশন সূত্র জানায়, ইউসিবি ব্যাংকের অর্থায়নে নগর ভবনের সামনের মোড়ে একটি সৌন্দর্যবর্ধনকারী অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়। সিলেটের ঐতিহ্যবাহী আলী আমজাদের ঘড়ি ঘরের আদলে নির্মিত এই স্থানে ট্রাফিক পুলিশের দায়িত্ব পালনেরও ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। নগর চত্বর নামে সেখানে একটি ফলকও লাগানো হয়। রবিবার রাতে এর উদ্বোধন করেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। সন্ধ্যায় গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে আরিফুল হক বলেন, সিটি পয়েন্ট বা নগর চত্বর নামকরণের অনেকগুলো প্রস্তাব ছিল। এরমধ্যে প্রয়াত দেওয়ান ফরিদ গাজী, সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমান ও সিলেট পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান আ ফ ম কামালসহ অনেকের নামে নামকরণের প্রস্তাব ছিল।
এছাড়া সদ্যপ্রয়াত সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের পরিবারের পক্ষ থেকে তার ছেলে ডা. আরমান আহমদ শিপলু নগরীর কোনো প্রতিষ্ঠানকে তার বাবার নামে নামকরণের প্রস্তাব দেন। তার দেওয়া প্রস্তাবের পর সিটি করপোরেশনের কোনো সাধারণ সভা না হওয়ায় বিষয়টি আলোচনা করা যায়নি। তবে মঙ্গলবার অনুষ্ঠিতব্য সাধারণ সভায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে।