মালয়েশিয়া প্রবাসীদের নিপীড়ন নিয়ে আল জাজিরায় কথা বলা বাংলাদেশি তরুণ মো. রায়হান কবিরকে গ্রেপ্তার করেছে মালয়েশিয়ার পুলিশ। মালয়েশিয়ার বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেশটির ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালক দাতুক খায়রুল দাযাইমি দাউদকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারের আগে গতকাল নিজের হোয়াটস অ্যাপ থেকে এই প্রতিবেদককে একটি বার্তা পাঠিয়ে রায়হান কবির দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমার অপরাধটা কী? আমি তো কোনো মিথ্যা বলিনি। প্রবাসীদের ওপর যে বৈষম্য ও নিপীড়ন চলেছে, আমি শুধু সেই কথাগুলো বলেছি। আমি চাই প্রবাসে থাকা কোটি বাংলাদেশি ভালো থাকুক। আমি চাই পুরো বাংলাদেশ আমার পাশে থাকুক।’
গত ৩ জুলাই আল জাজিরার ইংরেজি অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে ‘লকডআপ ইন মালয়েশিয়ান লকডাউন-১০১ ইস্ট’ শীর্ষক একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনে মালয়েশিয়ায় থাকা প্রবাসী শ্রমিকদের প্রতি লকডাউন চলাকালে দেশটির সরকারের নিপীড়নমূলক আচরণ উঠে আসে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, রায়হান কবির নামের এক বাংলাদেশি এই নিপীড়নের প্রতিবাদ করেছেন। আল জাজিরার প্রতিবেদন দেখে রায়হান কবিরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়।
রায়হান কবিরের বাড়ি বাংলাদেশের নারায়ণগঞ্জের বন্দরে। তার বাবা শাহ আলম একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। গতকাল রাতে তিনি বলেন, ‘আমি রাতে খবর পেয়েছি। আমাকে একজন ছেলের গ্রেপ্তারের ছবি পাঠিয়েছে। আমার ছেলেটা ছোটবেলা থেকেই অন্যায়ের প্রতিবাদ করে। কিন্তু নিজে কোনোদিন কোনো অন্যায় করেনি। ২০১৪ সালে তোলারাম কলেজে থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করে মালয়েশিয়া চলে যায়। সেখানেই বিএ পাস করে।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে শাহ আলম আরও বলেন, ‘ছেলের চিন্তায় ওর মা অসুস্থ। আমি নানা মাধ্যমে শুনেছি, আমার ছেলে অন্যায়ের প্রতিবাদ করে গ্রেপ্তার হয়েছে। আমার বিশ্বাস আমার ছেলে সত্য বলেছে। ন্যায়ের পথে ছিল। আমি চাই পুরো দেশ ওর পাশে থাকুক।’
গত ৩ জুলাই আল জাজিরার ইংরেজি অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর থেকে দেশটির স্থানীয় নাগরিকরাও সরব হয়েছেন। প্রতিবেদনে বলা হয়, মালয়েশিয়া সরকার মুভমেন্ট কনট্রোল অর্ডারের (এমসিও) মাধ্যমে মহামারির সময়ে অভিবাসীদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করছে।