ভোরের আলো ডেষ্ক: প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস তাণ্ডব চালাচ্ছে বিশ্বজুড়ে। সম্মুখ যোদ্ধা হিসেবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা। বিশেষ করে করোনা হাসপাতালের চিকিৎসকরা তো দম ফেলারও ফুরসত্ পাচ্ছেন না।
ভারতের মহারাষ্ট্রের দুই জুনিয়র চিকিৎসকও এর বাইরে নন। তারাও করোনা আক্রান্তদের জীবন বাঁচাতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ফলে অঙ্গরাজ্যটির রাজধানী শহর মুম্বাইয়ের সিওন হাসপাতালে করোনা রোগীদের সেবা দিতে গিয়ে পিছিয়ে যায় তাদের বিয়েও। অবশেষে সেই হাসপাতালেই সারলেন নিজেদের বিয়ে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, মহারাষ্ট্রে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়ে গেছে। এর মধ্যে মুম্বাইয়ের অবস্থা সবচেয়ে বেশি নাজুক। ফলে প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও পরস্পরকে আপন করে নিতে পারছিলেন না ডা. রিম্পি নাহারিয়া (২৯) ও ডা. সারজেরাও সোনুনে (৩০)।
করোনা রোগীদের চিকিৎসা করতে গিয়ে বারবার পিছিয়ে যায় এ দুই অ্যানাসথেসিওলজিস্টের বিয়ে। অবশেষে ঠিক হলো বিয়েটা করেই ফেলবেন তারা। তবে বিয়ের সব আয়োজন হবে তাদের কর্মস্থল হাসপাতালেই।
রিম্পি ও সারজেরার বিয়ের গায়ে হলুদ উপলক্ষে ফুল দিয়ে সাজানো হয় হাসপাতালের হোস্টেলের অষ্টম তলা। করোনায় যখন হাসপাতালে শুধুই মৃত্যু আর কান্নার আহাজারি, সেখানে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মাঝে আনন্দের এক টুকরো বাতাস বয়ে আনল এই বিয়ের অনুষ্ঠান।
চিকিৎসক জুটির বিয়ের অনুষ্ঠান উপলক্ষে ৩০ জুন তাদের সহকর্মীরা ফুল ও আলোয় সাজিয়ে তুলে হাসপাতাল। অর্ডার দেওয়া বিশেষ খাবারদাবারের।
হরিয়ানার পাত্রী রিম্পি বলেন, আমরা কখনও বিরাট ধূমধাম করে বিয়ে করতে চাইনি। কিন্তু বিয়েতে বিশেষ একটা কিছু করতে চেয়েছিলাম। এই ভাবেই আমাদের বন্ধুরা আমাদের বিয়েটাকে স্পেশাল করে তুলল।
এমডি কোর্স শেষ করে মে মাসে বিয়ে করার কথা ছিল দুইজনের। সেই সময়েই ভারতজুড়ে থাবা বসায় করোনাভাইরাস। ফলে বিয়েটা বাতিল করে দিতে হয় তাদের।
ডাক্তার বর সারজেরাও বলেন, যে মহামারিতে সারা পৃথিবী আক্রান্ত, তা যে কবে শেষ হবে, কবে এর থেকে নিস্তার পাওয়া যাবে, তার কিছুই এখনও বুঝে ওঠা যাচ্ছে না। সেই কারণেই বিয়েটা সেরে ফেলার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।