ভোরের আলো ডেষ্ক: ভারত ও চীনের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। লাদাখ সীমান্তে গলওয়ান উপত্যকায় চীনা সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষের পর সতর্ক অবস্থানে আছে দুই দেশের সেনারা।
এদিকে, মঙ্গলবার পূর্ব লাদাখের চুসুল-মলডো সীমান্তে বৈঠকে বসেছিল দু’দেশ। কিন্তু বৈঠকে সমাধানসূত্র পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে। ভারত প্যাংগং ও গালওয়ান উপত্যকায় দখল করা জমি ছাড়তে বললে চীন উল্টা লাদাখ সীমান্তে ভারতীয় সেনা কমানোর চাপ দেয়। সব মিলিয়ে সীমান্তে অচলাবস্থা কাটেনি। যদিও দিল্লির মতে, এটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া। এত সহজে মিটবে সেই আশা করা ঠিক নয়। গতবারের মতো এ বারও প্রায় ১১ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে বৈঠক চলেছে দু’পক্ষের।
চুসুল সীমান্তে আয়োজিত বৈঠকে ভারতের পক্ষে ১৪ কোরের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরেন্দ্র সিংহ ও চীনের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ জিংজিয়াং মিলিটারি ডিস্ট্রিক্টের চিফ মেজর জেনারেল লিউ লিন। বৈঠকে মূলত ফিঙ্গার আট থেকে চার পর্যন্ত চীনা সেনার ফিরে যাওয়ার প্রসঙ্গে আলোচনা করে নয়াদিল্লি।
এর আগের বৈঠকটি হয়েছিল ২২ জুন। গত আট দিনে সেনা কমানো তো দূরের কথা, উল্টে বিতর্কিত এলাকাগুলোতে সেনা সমাবেশ ও পরিকাঠামো তৈরি করতে দেখা গিয়েছে চীনকে। পরিকাঠামো নির্মাণ ও গালওয়ান উপত্যকার একাংশে চীনের সামরিক প্রস্তুতি নিয়ে আপত্তি জানায় ভারত। গালওয়ান ও গোগরা হট স্প্রিং এলাকা থেকে চীনকে সরতে বলা হয় বৈঠকে।
এপ্রিল থেকে প্যাংগং এলাকায় প্রবেশ শুরু করেছিল চীনা সেনা। সংখ্যা বাড়িয়ে কব্জা করে নেয় ওই লেককে ঘিরে থাকা ফিঙ্গার ৪ থেকে ফিঙ্গার-৮ পর্যন্ত এলাকা। যে এলাকাকে এত দিন বিতর্কিত এলাকা বা ‘গ্রে জোন’ হিসেবে মনে করত দু’পক্ষই। দুই শিবিরই নিজেদের এলাকা ধরে নিয়ে টহল দিত ফিঙ্গার চার থেকে আট পর্যন্ত।
কিন্তু এ যাত্রায় একেবারে ফিঙ্গার চার পর্যন্ত ঢুকেছে চীনা সেনা। সূত্রের মতে, আজ সেখান থেকে তাদের সরে যেতে বলা হলে চীনের পক্ষ থেকে পাল্টা প্রস্তাবে বলা হয়, তারা ফিঙ্গার ছয় পর্যন্ত ফিরে যেতে রাজি। তার বেশি নয়। সে ক্ষেত্রে ভারতের সীমান্ত ফিঙ্গার টু-তেই শেষ হযে যাবে। যার অর্থ, দু’মাস আগেও ফিঙ্গার-৮ পর্যন্ত টহল দেওয়া যেত, সেখানে চীনের প্রস্তাবে রাজি হলে ফিঙ্গার টু অতিক্রম করতে পারবে না ভারত। হারাতে হবে বড় মাপের ভূখণ্ড।
এদিকে, অধিকৃত এলাকা যে চীনের ছাড়ার ইচ্ছে নেই তা স্পষ্ট একটি উপগ্রহ চিত্রে। যাতে প্যাংগং লেকের ধারে ফিঙ্গার চার ও পাঁচের মাঝে বিশালাকার চিনের মানচিত্র আঁকা দেখা যাচ্ছে। যা ধরা পড়েছে উপগ্রহ চিত্রেও। একই সঙ্গে গালওয়ান উপত্যকার মতোই চার থেকে ছয়ের মাঝে তৈরি করেছে একাধিক অস্থায়ী ছাউনি। জানা গেছে, হেলিপ্যাড বানানোর প্রচেষ্টাও চালু রয়েছে।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা।