জাতীয় সংসদে সর্বোচ্চ সংখ্যক বাজেট উপস্থাপনকারী, সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ও তার ছেলে শাহেদ মুহিতকে ঘিরে গত দু’দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সরগরম। বাবা-ছেলের সম্পর্ক নিয়ে চলছে মুখরোচক গল্প। তবে এই গল্পকে ‘অপপ্রচার’ বলেই দাবি করছেন সিলেটের মানুষ। দলমতের ঊর্ধ্বে ওঠে এর সমালোচনা করছেন তারা।
ক্ষোভ প্রকাশ করছেন বয়োঃজ্যেষ্ঠ এই অর্থনীতিবীদের পরিবার নিয়ে অপপ্রচারের। এ ধরণের অপপ্রচার সিলেটের মানুষের অন্তরে আঘাতের সামিল বলেও মন্তব্য করছেন অনেকে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী ফজলুল বারীর একটি পোস্ট ভাইরাল হয়।
তাতে তিনি উল্লেখ করেন, সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত বর্তমানে ‘ক্ষমতাহীন’ হয়ে পড়ায় তার ছেলে শাহেদ মুহিত তাকে বাসায় ‘জায়গা দিতে চাননি’। পরে প্রশাসনের লোকদের হস্তক্ষেপে ‘বাধ্য হয়ে’ শাহেদ তার বাবা মুহিতকে বাসায় ‘জায়গা দেন’।
ফজলুল বারীর এই পোস্ট ঘিরে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে সিলেটে। তীব্র প্রতিবাদ জানাতে থাকেন নানা অঙ্গনের মানুষ। শাহেদ মুহিতের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানিয়ে বলা হয়, ‘জাতীয় দুর্যোগের এই কঠিন সময়ে অসাধু উদ্দেশ্যে এক বা একাধিক স্বার্থান্বেষী এবং কুরুচিপূর্ণ মহল আবুল মাল আব্দুল মুহিতের মতো একজন অত্যন্ত সম্মানীয় ব্যক্তি ও তার পরিবারের সুনাম নষ্ট করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। কেন বা কি কারণে তারা এমন করছে এটা আমাদের বোধগম্য নয়।’
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন ফেসবুকে লিখেছেন, ‘নিকৃষ্ট জীবের মতো আচরণ শুধু মানুষ নামের বিষাক্ত ব্যক্তির দ্বারাই সম্ভব। আমরা হতবিহ্বল। ধিক্কার জানানো ভাষা হারিয়ে গেছে। কথায় বলে আচরণেই বংশের পরিচয়। চামচিকার মাতব্বরি ক্ষণিকের। মানির মান আল্লাহ রাখবেন।’
সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ ক্ষোভ প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘বৃহত্তর সিলেটের কৃতি সন্তান, সিলেটবাসী যাকে নিয়ে গর্ব করে, সাবেক সফল অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত ও তার পরিবারকে নিয়ে এসব অপপ্রচারের নিন্দা জানাই।’
অপপ্রচারের নিন্দা জানিয়ে ফজলুল বারীর উদ্দেশ্যে সিলেটের প্রগতিশীল আন্দোলনের পরিচিত মুখ আল আজাদ লিখেছেন, ‘প্রিয় ফজলুল বারী, মহান ভাষাসংগ্রামী, মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানী, সফল অর্থমন্ত্রী, লেখক, বুদ্ধিজীবী, পরিবেশবীদ আবুল মাল আব্দুল মুহিতকে নিয়ে এমন একটি কাজ করে সিলেটবাসীর এতোদিনের বিশ্বাসটা ভেঙে দিলেন। আর বলতে পারবো না, আমাদের একজন ফজলুল বারী আছেন। অনেক দূরে ঠেলে দিলেন আমাদেরকে। আমরা এই বৃদ্ধ মানুষটাকে যৌবনের প্রতীক মনে করে এখনো অসাধ্য সাধনের সাহস পাই আর পাবো।’
কবি আবিদ ফয়সাল লিখেছেন, ‘আবুল মাল আবদুল মুহিত শাব্দিক অর্থেই সর্বমান্য একজন প্রবাদপুরুষ। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ নাগরিক তাকে সম্মান এবং শ্রদ্ধা করেন। এবং এটাই তার যথার্থ প্রাপ্য। তার দোষ কীর্তন-গার্হস্থ্য কাহন রচনা ভদ্রোচিত কাজ নয়।’
এরকমভাবে রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের শত শত ব্যক্তিকে অপপ্রচারের প্রতিবাদ জানিয়ে ফেসবুকে পোস্ট দিতে দেখা গেছে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ তাফসীর