ভোরের আলো ডেষ্ক: হাসপাতালে রয়েছে হাতে গোনা কিছু অক্সিজেনের বোতল। ফলে এক-একটি বোতল ধরে থাকেন সাত-আটজন রোগী। মরচে ধরা অক্সিজেনের এসব বোতলই যেন তাদের কাছে হয়ে দাঁড়ায় পৃথিবীর সবচেয়ে মূল্যবান জিনিস। কে কার আগে সর্বশক্তি দিয়ে টানাটানি করে সেই বোতলের দখল নেবেন- আক্ষরিক অর্থে তারই প্রতিযোগিতা চলে চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লার জেনারেল হাসপাতালে। জীবন বাঁচানোর এই লড়াইয়ে সেখানকার চিকিৎসক কিংবা কর্মীদেরও করার কিছু নেই। গত শনিবার রাতেও এমন এক মর্মন্তুদ ঘটনার সাক্ষী ছিল চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ শাহ আলমকে (৪৮) অক্সিজেনের অভাবে চিরবিদায় নিতে হয় রাত ১১টার দিকে। তিনি সীতাকুন্ড পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি। সীতাকুন্ড পৌর সদরের ইসমাইল মিস্ত্রির ছোট ছেলে তিনি। শাহ আলমের ভাইয়ের ছেলে আশরাফ শোভন জানান, গত বৃহস্পতিবার শ্বাসকষ্ট নিয়ে তার চাচা শাহ আলম ফৌজদারহাটের বিআইটিআইডি হাসপাতালে ভর্তি হন। শনিবার তার নমুনায় করোনাভাইরাসের জীবাণু শনাক্ত হয়। সেখানে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাকে আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থার আরও অবনতি ঘটতে থাকলে সেখান থেকে বিকালে আন্দরকিল্লার জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আশরাফ শোভন বলেন, ‘বিকাল থেকেই আমার চাচার শ্বাসকষ্ট বাড়তে থাকে। এ সময় ডাক্তারদের আমরা অনেক অনুরোধ করেছি তাকে অক্সিজেন দেওয়ার জন্য। জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর সেখানে চরম অবহেলার শিকার হন চাচা। কোনো ডাক্তার ভালো করে দেখলেনও না। সেখানে দেখেছি, একটা অক্সিজেনের বোতল নিয়ে অন্তত ৭-৮ জন রোগী টানাটানি করছেন। শেষ পর্যন্ত রাত ১১টার দিকে অক্সিজেনের অভাবেই আমার চাচার মৃত্যু হলো।’