ভোরের আলো ডেষ্ক: নেত্রকোনার দুর্গাপুরে শ্রমিক লীগ নেতা লেবার সরদার আলাল নিজ ঘরে দুই স্ত্রী রেখে প্রবাসীর এক সন্তানের মাকে নিয়ে উধাও হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। এ ঘটনায় ওই প্রবাসীর বড় ভাই মো. লাক মিয়া (৫০) গত মঙ্গলবার দুর্গাপুর থানায় একটি অভিযোগটি দাখিল করেন।
অভিযোগের বিবরণে জানা যায়, জেলার কলমাকান্দা থানার উত্তর নাউরীপাড়া গ্রামের মৃত হাজী আ. হেকিমের ছেলে সৌদী প্রবাসী মো. কাউছার আহাম্মদ কাজল মনি আক্তার (২৫)কে বিয়ে করে। তাদের সংসারে ৫ বছরের এক ছেলে রয়েছে। বিয়ের পর সৌদী প্রবাসী মো. কাউছার আহাম্মদ কাজল একবার বাংলাদেশে এসেছিলেন।
সেই সুযোগে অর্থাৎ দুর্গাপুর চরমোক্তারপাড়া বসবাস করা অবস্থায় প্রতিবেশী নারীলোভী লেবার সরদার আলাল সৌদী প্রবাসী মো. কাউছার আহাম্মদ কাজলের স্ত্রী মোছা. মনি আক্তারের সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক গড়ে তোলে এবং এক পর্যায়ে ওই প্রবাসী মো. কাউছার আহাম্মদ কাজলের সঙ্গে স্বামী-স্ত্রী সম্পর্ক ছিন্ন করার পরিবেশ ঘটায় অবৈধ উপায়ে রাতারাতি কোটিপতি হয়ে যাওয়া লেবার সরদার আলাল। পাশাপাশি ওই প্রবাসীর স্ত্রী মনি আক্তার (২৫)কে চতুর্থতম বিয়ে করে লেবার সরদার আলাল।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আলাল সরদার বিবাহিত আরো তিনটি স্ত্রীর মধ্যে একটিকে ডিভোর্স দিয়েছেন তিনি। আর তার দুই স্ত্রীর তিন সন্তান রয়েছে। স্ত্রীদের জন্যে আলাদা বাসা তৈরি করে দিয়েছেন। পৌর সদরের প্রবেশ করে সোমেম্বরী নদীতে বালুর ঘাটে শ্রমিকদের সরদারী করেন দীর্ঘদিন। কিছুদিন পরেই স্থানীয় কতিপয় নেতাদের মদদপুষ্টে পৌর শ্রমিক লীগ সভাপতির পদ ভাগিয়ে নেন।
বৈধ ও অবৈধ উপায়ে নানাভাবে বিত্তশালী হওয়ায়, সহজ-সরল সুন্দরী মেয়েদের নানা লোভে ফেলে চরিতার্থ করে লালসা। বালু ঘাটের কুলির সর্দার থেকে রাতের আঁধারেই কোটি কোটি টাকার মালিক বনে যান তিনি। ওই পদের নাম ভাঙ্গিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পেছনে ফিরে তাকাতে হয় না আলাল সর্দারকে।
পৌর এলাকায় আলাল সর্দারের বিরুদ্ধে সরকারি খাস জমি দখল, নামে-বেনামে ৫টি বাড়ি নির্মাণ, বেশকটি ট্রাকের মালিক, জমি দখলকে কেন্দ্র করে অসহায় কামালকে মারধর, শুটকি ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে মারধর, পৌর সদরের বালু মহালে শ্রমিক মারধর, গুটিকয়েক রাজনৈতিক নেতার প্রশ্রয়ে নানা ধরনের অনিয়ম বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
পৌর শহরের শহর রক্ষা বাঁধ এর ব্লক তুলে স্থাপনা নির্মাণসহ নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পেটানোর অভিযোগ রয়েছে। তার নামে খুনের মামলা রয়েছে। হঠাৎ বড় লোকের ঘ্রাণে মানুষকে মানুষ মনে করছেন না তিনি। টু থেকে টা কষলেই হুমকি দিয়ে বেড়ান যে কাউকেই! তার এ অনিয়মের খুঁটির জোড় কোথায় জানতে চায় অসংখ্য ভুক্তভোগী। স্থানীয় প্রশাসনসহ সরকার সংশ্লিষ্টদের নজরদারি কামনা করছেন সচেতন মহল।
অভিযোগ নিয়ে আলাল সর্দার মুঠোফোনে বলেন, আমাকে জড়িয়ে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্যি নয়। নানা অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকার ওপর প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি কোনো অনিয়মের সঙ্গে জড়িত নই। যার টাকা আছে, তার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠতেই পারে।
এ বিষয়ে দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান প্রতিবেদককে জানান, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি সত্যিই দুঃখজনক। এ ব্যাপারে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।