লিখেছেন ডা. আতিকুজ্জামান ফিলিপ
মন্ত্রী-সচিব যারা করোনায় আক্রান্ত হবেন তাদের যদি কখনো হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয় তবে সেইক্ষেত্রে তারা যেন কোন বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে বরং সরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েই চিকিৎসা নেন সেটা নিশ্চিত হওয়া উচিৎ বলে মনে করি। বিশেষ করে যারা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে জড়িত ছিলেন বা আছেন তাদের জন্য তো এটা অত্যাবশ্যকীয় ফরজ হওয়া উচিত।
কারণ তারা নিজেরা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে থেকে সরকারি হাসপাতালগুলোতে দেশের সাধারণ মানুষের জন্য যেসব ব্যবস্থাপনা তৈরি করেছেন তাতে তাদের নিজেদেরই সর্বাগ্রে আস্থা আনা জরুরি। তাতে করে সাধারণ জনগণেরও সরকারি হাসপাতালগুলোর প্রতি আস্থা বাড়বে বা নতুন করে আস্থা তৈরি হবে।
দেশের সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের হাজার হাজার কোটি টাকায় হাসপাতালগুলোতে যেসব ব্যবস্থাপনা তারা তৈরি করেছেন তাতে যদি তারা নিজেরাই আস্থা আনতে না পেরে উল্টো দেশের কর্পোরেট বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ছুটেন তাহলে দেশের সাধারণ জনগণ দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোর প্রতি আস্থা আনবেন কীভাবে!
জনগণ যদি এমন প্রশ্নও তুলে যে, ‘আমাদের ট্যাক্সের হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়ে যেসব হাসপাতাল বানানো হলো বা হাসপাতালের যেসব যন্ত্রপাতি কেনা হলো বা হাসপাতালের যেসব সুযোগসুবিধা তৈরি করা হলো সেগুলো কি মানসম্মত বা বিশ্বাসযোগ্য না তাই আপনারা ভরসা পাচ্ছেন না?’
তাহলে জনগণের এই প্রশ্নের সমাধান হবে কীভাবে?
একজন চিকিৎসক হিসেবে মনে করি, সরকারি হাসপাতালগুলোর চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা নিয়ে এদেশের সাধারণ মানুষের যে অভিযোগ এবং মূলত সেসব কারণেই চিকিৎসকদের সাথে সাধারণ রোগী ও জনগণের প্রায়শই যে দূরত্ব তৈরি হয় তা কিছুটা হলেও কমবে যদি আমাদের মন্ত্রী মিনিস্টার ও ভিআইপিরা দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে সাধারণ রোগীর মতো চিকিৎসাসেবা নেন।
পুনশ্চ: যেহেতু এখন সারাবিশ্বেই এই করোনা মহামারি চলছে এবং যেহেতু এই মহামারি মোকাবেলা করতে বিশ্বের অনেক অনেক নামীদামী এবং উন্নত দেশ নাকানিচুবানি খাচ্ছে সেহেতু হয়তো তারা এখন দেশের বাইরে উন্নত কোন দেশে গিয়ে চিকিৎসা নিতে পারছেন না! সুযোগ থাকলে তারা যে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে সেইসব দেশে পাড়ি জমাতেন তা নিশ্চিত করেই বলা যায়, আমাদের অতীত ইতিহাস অন্তত তাই ই বলে।