ভোরের আলো ডেষ্ক: বিক্ষোভের মধ্যে চার্চে গিয়েও প্রার্থনা করলেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার বদলে চার্চের সামনে হাতে বাইবেল উচিয়ে ধরে ফটোসেশন করলেন তিনি।
অথচ তিনি চার্চে যাবেন বলে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভেও টিয়ারগ্যাস আর রাবার বুলেট ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়।
চার্চ ও বাইবেল নিয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের এমন কাণ্ড দেখে বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ হয়েছেন ওয়াশিংটনের ধর্মীয় নেতারা। খবর সিএনএন ও দ্য গার্ডিয়ানের।
সোমবার সন্ধ্যায় ওয়াশিংটনের সেইন্ট জোনস এপিস্কোপাল ডায়াসিস গির্জা পরিদর্শন করেন ট্রাম্প। গির্জাটি মার্কিন প্রেসিডেন্টরা উপাসনালয় হিসেবে এক শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে ব্যবহার করছেন।
কিন্তু ট্রাম্প চার্চে কোনো প্রার্থনার জন্য যাননি। শুধু বাইবেল হাতে ছবি তুলতেই তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। চার্চের সামনে দাঁড়িয়ে ছবিতে পোজ দেয়ার সংবাদে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন চার্চের তত্ত্বাবধায়ক বিশপ ম্যারিয়েন বাডি।
গণমাধ্যমকে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আসবেন তা আমেদেরকেও জানানো হয়নি। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক প্রচারণার স্বার্থে’ চার্চের সামনে দাঁড়িয়ে ছবির জন্য পোজ দিয়েছেন প্রেসিডেন্ট। এ ঘটনায় তার শঠতার পরিচয় মিলেছে।
চার্চ তত্ত্বাবধায়ক বাডি আরও বলেন, বাইবেল কোনো আমেরিকান দলিল নয়। এটা শুধু আমাদের দেশের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো অভিব্যাক্তি নয়। এটা বিশ্বের মানুষের সেবা ও ভালোবাসার এবং সৃষ্টিকর্তাকে জানার বিষয়।
তিনি বলেন, আমাদের দেশ এবং আমি কেবল বিশ্বকে জানাতে চাই যে, আমরা ওয়াশিংটনের রাজপথে যীশু এবং তার প্রেমের পথ অনুসরণ করি। আমরা এই প্রেসিডেন্টের ঔদ্ধত্যের ভাষা থেকে নিজেদেরকে দূরে রাখি।
তিনি আরও বলেন, আমরা জর্জ ফ্লয়েড এবং অগণিত মৃত্যুর বিচার চাইতে যারা পথে নেমেছে তাদের সাথে একাত্বতা প্রকাশ করি।
কৃষ্ণাঙ্গ যুবক জর্জ ফ্লয়েডের হত্যাকাণ্ড বিষয়ে ট্রাম্পের বেশিরভাগ বক্তব্য ও কর্মকাণ্ডই বিতর্ক উসকে দিয়েছে।
সোমবার তিনি বিক্ষোভ ঠেকানো নিয়ে বক্তব্য দেন। এ সময় বিক্ষোভ দমাতে হাজার হাজার সশস্ত্র সামরিক সেনা নামানোর হুমকি দেন। ট্রাম্পের এ বক্তব্যেকে উসকানিমূলক বলে আখ্যা দিয়েছে রাজ্যের সিনেটররা।
তার এই বক্তব্যের পরই সেনাবাহিনী, সিক্রেট সার্ভিট এবং মিলিটারি পুলিশের শতশত সদস্য হোয়াইট হাউসের আশপাশে ন্যায়বিচারের দাবিতে স্লোগানরতদের ওপর হামলে পড়ে। টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে, রাবার বুলেট-স্টান গ্রেনেড ছোড়ে।
এ সময় আন্দোলনকারিরা দু’হাত ওপরে উঠিয়ে বলতে থাকেন, ‘আমরা আত্মসমর্পণ করছি, তবুও গুলি করো না।’ কিন্তু তাতেও অভিযান থামেনি।
প্রেসিডেন্টের নির্দেশ অনুযায়ী এই অভিযানে ঘোড়সওয়ার নিরাপত্তা রক্ষীরাও অংশ নেয়। পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়।