ভোরের আলো ডেস্ক:
ত্রাণ বিতরণকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে তেল ব্যবসায়ী আশরাফ উদ্দিন বাহিনী ও সাবেক কাউন্সিলর সিরাজ মন্ডলের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া এবং রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ২০ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৭ জন রাবার বুলেটবিদ্ধ হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে সিটি করপোরেশনের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সিদ্ধিরগঞ্জের এসও রোড এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিকালে সাবেক কাউন্সিলর সিরাজুল ইসলাম মন্ডলের লোকজন এসওরোড ডিপো সংলগ্ন খেঁজুরগাছ তলা এলাকায় অসহায় মানুষদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করছিলেন। এসময় আশরাফ বাহিনীর কয়েকজন সদস্য মুন্নাসহ কয়েকজন তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে এবং সিরাজ মন্ডলের নাম ধরে গালমন্দ করে। এতে সিরাজ মন্ডলের লোকজন প্রতিবাদ করলে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে সিরাজ মন্ডলের লোকজনকে মারধর করে আশরাফ বাহিনীর লোকজন। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সিরাজ মন্ডলের লোকজন এগিয়ে আসলে আশরাফ বাহিনী পালিয়ে যায়।
কিছুক্ষণ পর আশরাফ, মহিউদ্দিন, খোরশেদ, নাজির, মুন্না, সোহেল মাস্টার, পানি আক্তার, খোকন (ইবা), সুমন (আইলপাড়া), ইপ্তি, রিফাতসহ ৪০-৫০ জন দেশীয় অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে সিরাজ মন্ডলের লোকজনের উপর দ্বিতীয় দফায় হামলা করে। এতে দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে উভয়পক্ষের অন্তত বিশ জন আহত হন। এ সময় এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হলে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশ ও র্যাব-১১ এর একটি টিম ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ছুড়লে উভয়পক্ষের লোকজন ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
পুলিশের তৎপরতায় সিরাজ মন্ডলের অনুসারী ৬ জনসহ ৭ জন রাবার বুলেটবিদ্ধ হয়েছেন বলে দাবি করেছে সংঘর্ষে জড়িত দুই পক্ষের লোকজন। রাবারবুলেবিদ্ধরা হলেন, সুমন, বাক্কু, নোমান, রাকিব, বড় সমুন, আলাউদ্দিন ও সালাম। এছাড়াও কালাম ও জসিম নামে সিরাজ মন্ডলের অরো দুই অনুসারিকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে সিরাজ মন্ডল জানান, আমার লোকজন ত্রাণ দিচ্ছিলেন। সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ দেয়া হয়। বিকালে এসও রোড খেজুর গাছ তলা এলাকায় ত্রাণ দেয়ার সময় বিনা কারণে আমার ছেলেদের উপর আশরাফ উদ্দিনের লোকজন হামলা করে। পরে বাধা দিলে তারা দ্বিতীয় দফায় হামলা করে। আমি মনে করি এটা তাদের পরিকল্পিত হামলা। তিনি বলেন, আমি আশরাফসহ হামলাকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
অপরদিকে আশরাফ উদ্দিন পাল্টা দাবি করেন, তাকে হত্যার উদ্দেশ্যেই পরিকল্পিতভাবে তার অফিসে হামলা করা হয়েছে এবং তার অফিস ভাংচুর করা হয়েছে।
সংঘর্ষের সত্যতা নিশ্চিত করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি কামরুল ফারুক সময় নিউজকে জানান, ত্রাণ দেয়ার সময় একপক্ষ আরেক পক্ষের সাথে দুর্ব্যবহার করায় এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে সংঘাত হয়। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে।
তিনি বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ২ রাউন্ড রাবার বুলেট ছুঁড়তে হয়েছে পুলিশকে। বর্তমানে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এ ঘটনায় কোন অভিযোগ না থাকায় কাউকে আটক করা হয়নি। তবে কেউ অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
(ভোরের আলো/ফআ)