প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের কারণে চাহিদা কমে যাওয়ায় জ্বালানি তেল নিয়ে বিপাকে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র। উৎপাদিত তেল রাখার জায়গাও ফুরিয়ে আসছে তাদের। ইতিহাসে প্রথমবারের মতো দেশটিতে ব্যারেল প্রতি তেলের দাম নেমে এসেছে নেতিবাচক সূচকে!
বার্তা সংস্থা বিবিসি জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে মজুত তেল রাখার যে পরিমাণ জায়গায় আছে তা মে মাস নাগাদ ফুরিয়ে যাবে। পরিস্থিতির উন্নতি না হলে তেল নিয়ে আরও বিপদে পড়তে পারে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দেশটি।
করোনাভাইরাসের কারণে চলমান লকডাউনে মানুষজন ঘরমুখী হয়ে পড়ায় যুক্তরাষ্ট্রে জ্বালানি তেলের চাহিদা কমে এসেছে ব্যাপক হারে। একই দৃশ্য বিশ্ব জুড়েও।
এমন অবস্থায় ট্যাংকার ভাড়া এনে তাতে উদ্বৃত্ত তেল মজুত করছে যুক্তরাষ্ট্রের তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। আর চাহিদার চেয়ে জোগান মাত্রাতিরিক্ত হওয়ায় দেশটিতে ব্যারেল প্রতি তেলের দাম সোমবার নেমে আসে নেতিবাচক সূচকে।
ক্রুড ওয়েল তথা অপরিশোধিত তেল উৎপাদন কারকারী যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রতিষ্ঠান ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট- ডব্লিউটিআই’র তেলের ব্যারেল প্রতি দাম গড়পড়তা থেকে মাইনাস ৩৭.৬৩ ডলারে নেমে গেছে। অর্থাৎ সূচক নেতিবাচক হয়ে গেছে!
ছবি: বিবিসি
যুক্তরাষ্ট্রের তেলের দাম এমন নেতিবাচক হয়ে যাওয়াটাকে “খুবই অস্বাভাবিক’ হিসেবে দেখছেন সিএফআরএ রিসার্চের জ্বালানি শক্তি বিশ্লেষক স্টুয়ার্ট গ্লিকম্যান।
“(জ্বালানি তেলের) চাহিদা কমে যাওয়া খুবই ব্যাপক। এটা এত বেশি যে, মানুষের প্রত্যাশারও বাইরে।”
ভয়েস অব অ্যামেরিকা বলছে, আগের তুলনায় মানুষের ভ্রমণ সীমিত করায় তেলের চাহিদা কমে গেছে এবং তেল মজুতকেন্দ্রগুলোও পরিপূর্ণ হয়ে আছে।
“ন্যাশনাল এভারেজ গ্যাস প্রাইজেস” এর তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন রাজ্য জুড়ে দেখা গেছে যানবাহনের সাধারণ গ্যাসের দাম প্রতি গ্যালনে গড়ে ১.৮১ ডলার।
ওদিকে বিশ্ব তেল বাজারের এ রকম পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গত সপ্তাহে আলোচনা শুরু হয় তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর মধ্যে। গত ১৩ এপ্রিল নানা জল্পনার পর ওপেক প্লাস ও তেল উৎপাদক মিত্রদেশগুলো উৎপাদন কমানোর ঐতিহাসিক সমঝোতায় পৌঁছায়।
দৈনিক ৯৭ লাখ ব্যারেল তেল উৎপাদন কমানোর ব্যাপারে একমত হয়েছে শীর্ষ তেল উৎপাদক ও রপ্তানিকারকদের এই জোট, যা বিশ্বের মোট উৎপাদনের ১০ শতাংশ।