করোনাভারাসে আক্রান্ত মানুষের সেবা এবং রোগীদের আইসোলেশনে রাখতে নেত্রকোনায় নিজের বাড়ি ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন কণ্ঠশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যান্সি।
তিনি বলেন, ‘নেত্রকোনায় আমার নিজের একটি ডুপ্লেক্স বাড়ি আছে। সেই বাড়িটি করোনা রোগী কিংবা যোদ্ধাদের জন্য ছেড়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। যেহেতু বর্তমানে দেশ এক ক্রান্তিকাল সময় অতিক্রম করছে, সে জন্য বাড়িটি জনস্বার্থে ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে করে যদি কারো উপকারে আসে তাহলে সেটিই হবে আমাদের জন্য একটি বড় পাওয়া। কারোনা মহামারী থাকা অবস্থায় যতদিন দরকার ততদিন এই বাড়ি জনস্বার্থে প্রশাসন ব্যবহার করতে পারবেন।’
বাড়িটি কিভাবে কাজে লাগবে এমন প্রশ্নের জবাবে ন্যান্সি বলেন, ‘এ বিষয়ে নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলামের সঙ্গে কথা হয়েছে। তিনি কীভাবে বাড়িটি কাজে লাগাবেন তা আমাদের জানাবেন। আমরা বলেছি, এই বাড়িটি করোনা যোদ্ধা চিকিৎসকদের থাকার জন্য কাজে লাগাতে পারেন। আবার অনেকের আইসোলেশনে জায়গা হচ্ছে না সে ক্ষেত্রে তারা এই বাড়িটিকে কাজে লাগাতে পারে। এছাড়া চাইলে করোনাভাইরাসের সংবাদ সংগ্রহে সাংবাদিকগণও এখানে থাকতে পারেন।
কণ্ঠশিল্পী ন্যান্সি আরও বলেন, ‘আমরা একটি যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছি। এই যুদ্ধ কতদিন চলবে তা কেউ বলতে পারব না। দেশের মানুষ আজ অসহায়। খাদ্যের জন্য হাহাকার, সুচিকিৎসার অভাব। এই দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত। আমরা যারা স্বাবলম্বী আছি তাদের সবারই এগিয়ে আসা উচিত। আমার নিজের অনুশোচনার জায়গা থেকে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়েছে এই দুঃসময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত। শুধু বাড়ি না, আমার গাড়িটা পর্যন্ত দিয়েছি এই মানবতার সেবায়। এই দুঃসময়ে যদি আমরা মানবিক না হই, তাহলে তো আমরা মনুষ্যত্বহীন মানুষে গণ্য হবো। যতদিন না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে ততদিন বাড়িটি করোনা যোদ্ধারা ব্যবহার করতে পারবেন বলে জানান ন্যান্সি।’
নেত্রকোনার জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম জানান, কণ্ঠশিল্পী ন্যান্সী তার বাড়িটি ব্যবহারের কথা জানিয়েছেন। প্রয়োজন হলে আমরা তা কাজে লাগাবো।
নেত্রকোনায় মোট ২৭ জন করোনায় আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে জেলার বারহাট্রা উপজেলায় ১০ জন, নেত্রকোনা সদরে ৪ জন, খালিয়াজুরী উপজেলা ৪ জন, কেন্দুয়া উপজেলায় ১ জন, মোহনগঞ্জ উপজেলায় ২ জন, কলমাকান্দা উপজেলায় ৩ জন ও আটপাড়া উপজেলায় ৩ জন।