অনলাইন ডেস্ক:
চীনের একটি ছোট্ট শহর উহান। উহানের নামটার সঙ্গে হয়ত অনেকেই পরিচিত ছিলেন না। কিন্তু করোনা ভাইরাসের উৎস হিসেবে আজ সেই নাম যথেষ্ট পরিচিত। এরই মধ্যেই উহানের একটি ল্যাবরেটরির নাম বারবার উঠে আসছে আন্তর্জাতিক মহলে।
আমেরিকার দাবি, উহানের ‘ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি’ ল্যাবরেটরি থেকেই ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাসটি। যেখানে ইবোলা, সার্সের মতো বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক কিছু ভাইরাস নিয়ে কাজ করার কথা আগেই জানিয়েছে বেইজিং।
উহানের মাছের বাজারের সঙ্গে ভাইরাসের কোনও সম্পর্ক নেই বলেই মনে করছে বহু বিশেষজ্ঞ।
আমেরিকা এই বিষয়ে রীতিমত তদন্ত শুরু করেছে। মার্কিন সচিব মাইক পম্পেও জানিয়েছেন, কীভাবে গোটা বিশ্বে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ল তার নিখুঁত তদন্ত করবে আমেরিকা।
কী এই ‘ইনস্টিটিউট অফ ভাইরোলজি’?
চীনের ভাইরাস কালচার কালেকশনের কেন্দ্র এই গবেষণাগার। বলা যেতে পারে এটাই্ এশিয়ার বৃহত্তম ভাইরাস ব্যাংক। যেখানে ১৫০০০ ধরনের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা-নিরিক্ষা চলছে। যেসব ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ছড়াতে পারে, সেরকম ভাইরাস রয়েছে এই গবেষণাগারে।
৪২ মিলিয়ন ডলারে তৈরি করা হয় এই ল্যাবরেটরি। ২০১৫ সালে ল্যাব তৈরির কাজ শেষ হয়। ২০১৮ থেকে এখানে গবেষণার কাজ শুরু হয়। এখানে অবশ্য একটি ল্যাবরেটরি রয়েছে, যা ২০১২ থেকে কাজ শুরু করেছে।
এই গবেষণাগার অবস্থিত জঙ্গলে ঘেরা একটি পাহাড়ের তলায়। পাশেই রয়েছে জলাশয়। লোকালয় থেকে দূরে এই গবেষণাগার ৩২০০০ স্কোয়্যার ফুট জায়গা জুড়ে রয়েছে।
কী বলছে আমেরিকা?
করোনা ভাইরাস উহানের ল্যাব থেকেই ছড়িয়েছিল কিনা শুক্রবার সাংবাদিকদের এ প্রশ্নের উত্তরে ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, আমরা এটার দিকে নজর রেখেছি, আরও বহুলোক এর দিকে নজর রেখেছে। এটা ক্রমেই বোঝা যাচ্ছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, তারা(চীন) একটি নির্দিষ্ট ধরণের বাদুড়ের কথা বলেছেন, কিন্তু ওই বাদুড় ওই এলাকায় ছিলই না। তিনি বলেন, ওই এলাকায় বাদুড় বিক্রি হয়নি, সেটা বিক্রি হয়েছিল ৪০ মাইল দূরে।
এর আগের দিনই ফক্স নিউজ জানিয়েছিল, মারাত্মক ভাইরাসটি উহানের একটি ল্যাব থেকে ‘পালিয়েছে’ কিনা সে সম্পর্কে আমেরিকা পুরো জোর দিয়ে তদন্ত চালাচ্ছে। বিশেষ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলি পরীক্ষাগারগুলি ও রোগের প্রকোপ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছে।
ট্রাম্প জানিয়েছেন, উহানে অনুদান দেওয়া বন্ধ করবে আমেরিকা। ট্রাম্প বলেন, ওবামা সরকার তাদেরকে ৩.৭ মিলিয়ন ডলার অর্থ অনুদান দিয়েছিল। আমরা সেটা খুব শিগগিরি বন্ধ করে দেব।
এদিকে উহান ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজির ল্যাবের পরিচালক ইউয়ান ঝিমিং বলেছেন, এ ল্যাব থেকে ভাইরাসটির সূত্রপাত একেবারেই অসম্ভব বিষয়। এমনকি আমাদের কোন স্টাফও আক্রান্ত হয়নি। পুরো ইনস্টিটিউট করোনা ভাইরাস সম্পর্কিত বিভিন্ন গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে।
(ভোরের আলো/ফআ)