ভোরের আলো ডেস্ক:
মাওলানা যুবায়ের আহমদ আনসারীর জানাজায় লাখো মানুষের উপস্থিতির পর এবার লকডাউন উপেক্ষা করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে উপজেলা আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫ (নবীনগর) আসন থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের দলীয় সংসদ সদস্য এবাদুল করিম বুলবুলকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ ও আপত্তিকর লেখালেখির প্রতিবাদে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
স্থানীয়রা জানান, নবীনগর উপজেলার থানাকান্দিতে পা কেটে পৈশাচিক খুনের ঘটনায় দায়ের হওয়া হত্যা মামলায় বীরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কবির আহমেদকে প্রধান আসামি করা হয়। আর আসামি করার ঘটনায় এমপি বুলবুলের হস্তক্ষেপ রয়েছে উল্লেখ করে কবির চেয়ারম্যানসহ তার অনুসারীরা ফেসবুকে বুলবুলের ছবি দিয়ে অশ্লীল ভাষায় এমপি বিরোধী নানা পোস্ট দিচ্ছেন। এর প্রতিবাদেই এ সভার আয়োজন করা হয়। গতকাল শনিবার রাতেও বীরগাঁও বাজারে এমপি বুলবুল অনুসারীরা ফেসবুকে কটাক্ষকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লকডাউন উপেক্ষা করে আজ দুপুর ১২টায় উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের শত শত নেতাকর্মী আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে উপস্থিত হন। উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা নাছির উদ্দিনের পরিচালনায় সেখানে নবীনগর পৌরসভার মেয়র অ্যাডভোকেট শিব শংকর দাস, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সাদেক, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সুজিত কুমার দেব, শামীম রেজা, যুবলীগ সভাপতি সামস আলম, শ্রমিকলীগ নেতা ফোরকান উদ্দিন মৃধা, শ্রীরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান আজহার হোসেন জামাল, নবীনগর বাজার কমিটির সেক্রেটারি আশরাফুল ইসলাম জনিসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা বক্তব্য দেন। বক্তারা ফেসবুকে এমপি বুলবুলকে নিয়ে কটাক্ষকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানান।
এ প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনির। লকডাউন উপেক্ষা করে প্রতিবাদ সভার বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে লকডাউন ভঙ্গ করে আইন অমান্য করা হয়নি। আমরা কেবল সাংবাদিকদের ডেকে আমাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি। নেতাকর্মীদের আট থেকে ১০ জন উপস্থিত ছিল।’
প্রসঙ্গত, এলাকায় গ্রাম্য আধিপত্য বিস্তার নিয়ে নবীনগর উপজেলার কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান ও এলাকার আবু কাউছার মোল্লার সশস্ত্র লোকজনের মধ্যে পূর্ব বিরোধের জের ধরে গত ১২ এপ্রিল দফায় দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে প্রায় অর্ধশত লোক আহত হন। সংঘর্ষ চলাকালে কাউছার মোল্লার পক্ষের লোকজন পৈশাচিকভাবে প্রতিপক্ষের রিকশাচালক মোবারক মিয়ার (৪৫) একটি পা কেটে নেন। পরে ওই পা হাতে নিয়ে গ্রামে জয় বাংলা শ্লোগান দিয়ে আনন্দ মিছিল করেন দাঙ্গাবাজরা। পরে গুরুতর আহত মোবারক চারদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে গত ১৫ এপ্রিল মারা যায়। এ ঘটনায় গত ১৭ এপ্রিল কবির আহমেদ চেয়ারম্যানকে প্রধান আসামি করে ১৫২ জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়। তবে এ ঘটনায় কবির আহমেদ জড়িত না থাকার পরেও ব্যক্তিগত রোষানলে পড়ে আসামি হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলে তার অনুসারীরা ফেসবুকে এমপি বুলবুলের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ পোস্ট দেন।
(ভোরের আলো/ফআ)