করোনা মোকাবিলায় সরকার যখন বার বার আহ্বান জানাচ্ছে সবাইকে ঘরে থাকার, তখন নিজের ঘরে ফিরতে গত ১৯ দিন ধরে রাজধানীর গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করছেন ৭২ বছরের অশীতিপর পঞ্চানন গায়েন।
সাতক্ষীরা থেকে ঢাকায় এসে এরই মধ্যে হারিয়েছেন যোগাযোগের একমাত্র সম্বল মোবাইল ফোন আর পকেটের টাকা। খাবারের জন্য চেয়ে থাকতে হচ্ছে মানুষের দানের ওপর। আর যেদিন কিছুই জোটে না সেদিন অনাহার।
জমিজমা সংক্রান্ত মামলার কাজে মার্চের ১৫ তারিখে ঢাকায় আসেন সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার পূর্ব কাদাকাটি গ্রামের পঞ্চানন। এক সময়ে যিনি ছিলেন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য।
‘হাইকোর্ট এলাকার লোকজন বলল পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে। আপনি কাজ শেষ করেই যান,’ বলেন পঞ্চানন।
অপেক্ষায় থাকতে থাকতে সরকার সারাদেশে করোনা পরিস্থিতির জন্য সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। তারপরও তিনি মনে করেছিলেন পরিস্থিতি ঠিক হয়ে যাবে।
তবে হাইকোর্ট থেকে যেদিন মোবাইল ফোন হারালেন সেদিন বিপদ যেন আরও বাড়ল। ‘কেমন করে যেন গাবতলী বাসস্ট্যান্ডে আসি, তারপর থেকে এখানেই আছি,’ বলেন পঞ্চানন।
‘এখানে বাচ্চাদের কিছু লোক খাবার দেয়। আমাকেও দেয়। দিলে খাই, যেদিন দেয় না সেদিন উপোস থাকি।’
‘কোনোদিন ভাত। কোনোদিন ভাত না থাকলে মুড়ি দেয়, তাই খাই’, বলেন তিনি।
যোগাযোগ করা হলে কাদাকাটি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দীপংকর কুমার সরকার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আমরা আজকে শুনেছি তিনি ঢাকায় আটকা পড়েছেন। আমরা চেষ্টা করছি তাকে নিয়ে আসার কিন্তু পারব কিনা জানি না।’
পঞ্চানন গায়েনের ভাগনে বিশ্বনাথ সানা বলেন, ‘খালুর শারীরিক অবস্থা ভালো নয়। উচ্চ রক্তচাপের রোগী। তাকে বাড়িতে নিয়ে আসা দরকার।’