ভোরের আলো ডেস্ক:
করোনাভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির মধ্যে কর্মহীন মানুষকে সহায়তা দিতে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির বিশেষ ওএমএস কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম এ তথ্য জানান। দেশের বিভিন্ন স্থানে এই ওএমএসসহ খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল আত্মসাৎ ও চুরি হওয়া চাল আটকের পর খাদ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত আসলো। খাদ্য সচিব বলেন, ‘পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত বিশেষ ওএমএস কর্মসূচি স্থগিত থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘এটা (বিশেষ ওএমএস) মাত্রই শুরু হলো। দু’দিন মাত্র বিক্রি হয়েছে। এখানে সেভাবে অনিয়ম করতে পারেনি। ৫ তারিখে বিক্রি হয়েছে মহানগর ও জেলা শহরে, আর ৭ (এপ্রিল) তারিখে পৌর এলাকায় বিক্রি হয়েছে।
‘এই মুহূর্তে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চলছে। একই সময়ে পর্যাপ্ত ত্রাণও বিতরণ করা হচ্ছে। তাই চালের অ্যাভেইলঅ্যাবেলিটি থাকার কারণে দুর্নীতির সম্ভাবনা রয়েছে। কিছু অনিয়ম ধরা পড়ছে। তাই আমরা বন্ধ রেখেছি ওটা।’
নাজমানারা খানুম আরও বলেন, ‘একদিন বিক্রির পরই আমরা ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে বন্ধ রেখেছিলাম। এই কর্মসূচি স্থগিত করার আরেকটি কারণ হচ্ছে- চাল কেনার জন্য মানুষের গ্যাদারিং হয়, এতে করোনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। সচিব বলেন, ‘পরবর্তী সময়ে প্রয়োজন হলে এটা আবার চালু করা হবে। এখন ত্রাণের দিকেই জোরটা বেশি।’
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর গত ২৬ মার্চ থেকে দেশে সাধারণ ছুটি চলছে। এতে শ্রমজীবী মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। এই প্রেক্ষাপটে গত ২৫ মার্চ জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য ওএমএস খাতে ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি কেজি চালের মূল্য ৩০ টাকার স্থলে ১০ টাকা নির্ধারণ করার ঘোষণা দেন। এর প্রেক্ষিতে অর্থ বিভাগ চালের মূল্য কেজি প্রতি ১০ টাকা নির্ধারণ করে। এরপর খাদ্য মন্ত্রণালয় সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির কারণে গৃহে অবস্থানকারী সাধারণ শ্রমজীবী, দিনমজুর, রিকশাচালক, ভ্যানচালক, পরিবহন শ্রমিক, ফেরিওয়ালা, চায়ের দোকানদার, ভিক্ষুক, ভবঘুরে ও অন্যান্য সকল কর্মহীন মানুষের জন্য ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির কার্যক্রম গ্রহণ করে।
বিশেষ ওএমএস কর্মসূচির আওতায় ঢাকা মহানগরসহ দেশব্যাপী বিভাগীয় ও জেলা শহর এবং জেলা শহরবহির্ভূত পৌরসভায় সপ্তাহে প্রতি রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত বিক্রয় কার্যক্রম চালু করার কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। একজন ভোক্তা সপ্তাহে একবার মাত্র পাঁচ কেজি চাল ক্রয় করতে পারবে।
বিভিন্ন স্থানে এই ওএমএসের চাল কালোবাজারে বিক্রি এবং কয়েকটি জায়গায় ওএমএসের চালসহ কয়েকজন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরাও পড়েছে বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।
(ভোরের আলো/ফআ)