ভোরের আলো রিপোর্ট: ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের নেতা কাম জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে চাল চুরি করার প্রবনতা বেড়েই চলেছে। করোনা ভাইরাসের মতো আপদকালীন সময়ে গরীব মানুষের চাল ও গম গায়েব করে দিচ্ছেন সরকারি দলের বিনা ভোটে নির্বাচিত চেয়ারম্যান ও মেম্বাররা। চাল চোরদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার হুক্কার দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, খাদ্য মন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এবং ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মাহবুবুল আলম হানিফসহ সিনিয়র নেতাদের অনেকেই। এরপরও কাজ হচ্ছে না। অনেকে বলাবলি করছেন, স্বাধীনতা যুদ্ধের পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও এমন আক্ষেপ করে বলতেন, সবাই পায় সোনার খনি, আমি পেলাম চোরের খনি।
এদিকে করোনা মহামারির মধ্যে অসহায় ও নিম্নআয়ের মানুষের জন্য দেয়া ত্রাণের চাল চুরির ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে একটি আদেশও জারি করা হয়েছে।
শনিবার রাজধানীর মিন্টো রোডে সরকারি বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, ত্রাণ বিতরণে জনপ্রিতিনিধি বা অন্য কেউ অনিয়ম করলে বরখাস্ত ও ফৌজদারি মামলাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে শুরু করে অদ্যাবদি সারাদেশে তিন হাজার বস্তার বেশি ত্রাণের চাল চুরি ও বিক্রির খবর পাওয়া গেছে। এরসঙ্গে জড়িত অনেককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা প্রায় সবাই সরকারি দল ও সহযোগী সংগঠনের নেতা।
তাজুল ইসলাম স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান সমূহের জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, করোনাভাইরাস জনিত কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে অনিয়ম ও দুর্নীতি করলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। ইতিমধ্যে স্থানীয় সরকার বিভাগ হতে এ সংক্রান্ত জিও তথা অফিস আদেশ জারি করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশও করোনা ভাইরাসজনিত প্রতিকূল অবস্থা মোকাবেলা করছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক আমরা সবাই একযোগে কাজ করছি। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এই দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে বলে আমি আশা করি।
এদিকে স্থানীয় সরকার বিভাগ হতে জারিকৃত অফিস আদেশে বলা হয়, বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসের কারণে শহর ও গ্রামে বিপুলসংখ্যক মানুষের আয়-রোজগারের পথ বদ্ধ হয়ে পড়েছে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সকল ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের খাদ্য সহায়তা হিসেবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগ/ দপ্তর/সংস্থা ও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহ নিজস্ব অর্থায়নে ত্রাণ কার্যক্রম যেমন-চাল, নগদ অর্থ, শিশু খাদ্য ও অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ করছে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা/অনুশাসনের আলোকে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের জনপ্রতিনিধি এবং কর্মকর্তা/কর্মচারীরা তৃণমূল পর্যায়ে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ কাজে সরাসরি সম্পৃক্ত হয়েছেন।
কিন্তু বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জানা যায় যে, কোথাও কোথাও জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ ত্রাণ বিতরণে অনিয়ম/দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। এদের বরখাস্তকরণ, তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলাসহ কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।