দীন ইসলাম: পাপিয়ার খদ্দেরদের তালিকাকে অসত্য বলছে সরকার। এনিয়ে খোদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংবাদপত্রণ্ডলোকে থ্রেট দিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি পাঠায়। বিজ্ঞপ্তিতে সদ্য বহিষ্কৃত যুব মহিলা লীগের আলোচিত নেত্রী শামীমা নূর পাপিয়ার গ্রেফতার প্রসঙ্গে বিভ্রান্তিকর ও অসত্য সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। গত বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ অনুরোধ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গত ২২ ফেব্রুয়ারি হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে শামীমা নূর পাপিয়া ওরফে পিউ, স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে মতি সুমনসহ চারজনকে গ্রেফতার করে র্যা ব। এরপর থেকে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর নাম ও উৎস উল্লেখ করে বিভিন্ন পর্যায়ের ণ্ডরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নামে বিভিন্ন প্রিন্ট, ইলেক্ট্রনিক, অনলাইন মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তিকর ও সম্মানহানিকর সংবাদ পরিবেশিত হচ্ছে। যা জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করছে এবং এতে সামাজিক বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে। এতে আরও বলা হয়, আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিভিন্ন অভিযানে আটক ব্যক্তিদের সঙ্গে বিভিন্ন পর্যায়ে ণ্ডরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নাম জড়িয়ে অযথা সম্মানহানিকর, বিভ্রান্তিকর ও অসত্য সংবাদ প্রচার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এ অবস্থায় আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর নাম ও উৎস উল্লেখ করে বিভিন্ন পর্যায়ের ণ্ডরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নামে সম্মানহানিকর, বিভ্রান্তিকর ও অসত্য সংবাদ পরিবেশন থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হল। এদিকে টাকা পাচারের অভিযোগে গ্রেফতারকৃত নরসিংদী জেলা যুব মহিলা লীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক শামীমা নূর পাপিয়া ও তার স্বামীর অর্থের তথ্য জানতে দেশি-বিদেশি ৫৯টি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কাছে চিঠি দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত রবিবার দুদকের উপপরিচালক শাহিন আরা মমতাজ স্বাক্ষরিত চিঠিটি ব্যাংকণ্ডলোতে পাঠানো হয়। অন্যদিকে এই দম্পতির থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়ায় বাড়ি ও ব্যাংক হিসাবের তথ্য জানতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট বিএফআইইউর কাছে আলাদা চিঠি পাঠিয়েছে দুদক। এর আগে গত ২ মার্চ ওয়েস্টিন হোটেল কর্তৃপক্ষের কাছে পাপিয়া ও তার গেস্টদের নাম এবং যাবতীয় বিল-ভাউচারের কপি চেয়ে চিঠি দেয় দুদক। দুদক সূত্র জানায়, দেশি-বিদেশি ৫৯টি ব্যাংকের কাছে পাঠানো চিঠিতে পাপিয়া দম্পতির নিজ নামে এবং যৌথ মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের নামে খোলা চলতি হিসাব ও মেয়াদি আমানতের আর্থিক বিবরণ চাওয়া হয়েছে। চিঠিতে জরুরি ভিত্তিতে ঐ সব তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই করে দুদকের কাছে পাঠাতে বলা হয়েছে। দুদক সূত্র আরো জানায়, বিদেশে অর্থ পাচারসহ কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরীর বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে দুদক। এরই ধারাবাহিকতায় ব্যাংকণ্ডলোতে তথ্য জানতে চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। এই দম্পতির বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা, জাল টাকার ব্যবসা ও বিভিন্ন অনৈতিক কার্যকলাপের মাধ্যমে কোটি টাকা পাচার এবং কোটি কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ রয়েছে। এদিকে এনবিআর সূত্রে জানা যায়, পাপিয়া কর অঞ্চল-১০-এর আওতায় নিয়মিত আয়কর নথি জমা দেন। পাপিয়ার ২০১৯-২০ অর্থবছরে দাখিল করা আয়কর বিবরণী পর্যালোচনায় দেখা যায়, তিনি আয় দেখিয়েছেন মাত্র ৩ লাখ টাকা। আর মোট সম্পদের পরিমাণ উল্লেখ করেছেন ১৮ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গত ২২ ফেব্রুয়ারি জাল টাকা বহন ও টাকা পাচারের অভিযোগে পাপিয়া ও তার স্বামী মফিজুর রহমান ওরফে সুমন চৌধুরী ওরফে মতি সুমনসহ চার জনকে গ্রেফতার করে র্যাব।