প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ায়, এর প্রভাব বিশ্ববাজারে পড়েছে। ২০০৮ সালের বিশ্বমন্দার পর এ সপ্তাহে বিশ্বজুড়ে শেয়ারবাজারে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা দেখা দিয়েছে। বিবিসি বলছে, করোনাভাইরাস আতঙ্কে ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগের ঝুঁকি নিতে চাইছেন না। উপরন্তু বিনিয়োগ করা টাকাও তুলে নিচ্ছেন। বিভিন্ন প্রকল্প থেকে বিনিয়োগ গুটিয়ে নেওয়ার ধকল পড়ছে বাজারে।
গতকাল শুক্রবার ইউরোপের শেয়ারবাজারে বড় ধরনের পতন ঘটেছে। লন্ডনের ফিন্যান্সিয়াল টাইমস স্টক এক্সচেঞ্জ (এফটিএসসি) ১০০ সূচক ৩ শতাংশেরও বেশি পড়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্রের দি ডাও জোনসে বৃহস্পতিবার রেকর্ড দরপতনের পর গতকাল এশিয়ার শেয়ারবাজারে বড় পতন দেখা গেছে। চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়ার শেয়ার মার্কেট মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। এ বছর জাপানে অলিম্পিক হওয়ার কথা থাকলেও ভাইরাস আতঙ্কে তা বাতিলের খবর ছড়ায়। এতে জাপানের সূচক নিক্কেই গতকাল প্রায় ৩.৭ শতাংশ পড়ে গেছে।
গতকাল ইউরোপে সব প্রধান প্রধান শেয়ারের সূচকে বড় ধরনের পতন ঘটেছে। জার্মানি ও ফ্রান্সের শেয়ার যথাক্রমে ৩ দশমিক ৬ এবং ৩ দশমিক ১ শতাংশ পতন হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ার প্রধান শেয়ার সূচক এএসএক্স ২০০ পড়ে গেছে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ। ২০০৮ সালের মন্দার পর এই শেয়ারে এটিই সবচেয়ে বড় ধস। চীনের সাংহাই কমপোজিট সূচকও এদিন ৩ দশমিক ৭ শতাংশ পড়ে গেছে। আর গতকাল সকাল থেকেই নিম্নমুখী ভারতের বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ। বাজার খোলার সঙ্গে সঙ্গেই সেনসেক্স ১১৫৫ পয়েন্টের বেশি পড়ে পৌঁছে যায় ৩৮ হাজারের ঘরে। প্রায় ৩৫০ পয়েন্ট পতনে নিফটি নেমে যায় ১১ হাজারের ঘরে। টাটা মোটরস, হিন্দালকো, ভেদান্ত ও বাজাজ ফিনান্সের মতো শেয়ারগুলো ৩.৮৪ থেকে ৬.২৩ শতাংশ পর্যন্ত পতন হয়েছে।
ভাইরাস সংক্রমণের প্রভাবে প্রায় সব দেশেই শেয়ার বিক্রির ঢল দেখা গেছে। চীনের বাইরে সংক্রমণ যেভাবে ছড়াচ্ছে, তাতে আগামী দিনে শেয়ারবাজারে আরও পতনের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। গ্রেটার চীনের আইএনজির অর্থনীতিবিদ আইরিস প্যাং বলেন, ‘আগে বাজার ইতিবাচক থাকলেও এখন অনেক বেশি নেতিবাচক হয়ে গেছে। কেউই আশাবাদী হতে পারছেন না।’ স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের পরিকল্পনাবিদ মায়ানক মিশ্রা বলেন, ‘চীনে সংক্রমণ কমে আসায় বাজারে স্বস্তি ফিরেছিল। কিন্তু দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি, জাপানসহ বিভিন্ন দেশে ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ায় বাজারে আতঙ্ক ফিরে এসেছে।’