প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ায় টোকিও অলিম্পিক আয়োজন নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির (আইওসি) সিনিয়র সদস্য ডিক পাউন্ড হুঁশিয়ার করে বলেছেন, ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব না হলে বাতিল করা হতে পারে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসরটি।
১৯৭৮ সাল থেকে আইওসির সঙ্গে জড়িত আছেন সাবেক কানাডিয়ান সাঁতারু পাউন্ড। ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান তার বরাত দিয়ে বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) জানিয়েছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়লে কিংবা পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে ‘দ্য গ্রেটেস্ট শো অন আর্থ’ খ্যাত ক্রীড়াযজ্ঞটি পেছানো বা অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়ার কোনো পরিকল্পনা আপাতত নেই অলিম্পিক কমিটির। সেক্ষেত্রে সরাসরি বাতিল করে দেওয়া হবে টোকিও অলিম্পিক।
নির্ধারিত সূচি অনুসারে, আগামী ২৪ জুলাই থেকে ৯ অগাস্ট পর্যন্ত জাপানের মাটিতে অলিম্পিক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কিন্তু অন্যান্য অনেক দেশের মতে সেখানেও করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে। এরই মধ্যে চারজনের মৃত্যুর খবরও নিশ্চিত করেছে জাপান কর্তৃপক্ষ।
ভবিষ্যতে করোনাভাইরাস আরও বিপজ্জনক আকার ধারণ করতে পারে এমন আশঙ্কা করে পাউন্ড বলেছেন, ‘অনেক কিছু শুরু করতে হবে। খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা বাড়াতে হবে। খাবার, অলিম্পিক ভিলেজ, হোটেল। সাংবাদিক বন্ধুরা সেখানে থাকবেন, তারা নিজেদের স্টুডিও তৈরি করবেন। যদি আইওসি মনে করে যে নির্ধারিত সূচি অনুসারে টোকিও অলিম্পিক আয়োজন করা সম্ভব নয়, তাহলে সম্ভবত এটা বাতিলই করা হবে।’
অলিম্পিক অন্য কোথাও সরিয়ে নেওয়া কিংবা পিছিয়ে দেওয়া কেন সম্ভব নয় তার ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেছেন, ‘অলিম্পিকের মতো এত বড় আকারের কিছু স্থগিত করা যায় না। এখানে অনেকগুলো বিষয় কাজ করে, অনেক দেশ, অনেক মৌসুম, অনেক প্রতিযোগিতামূলক মৌসুম, অনেক টেলিভিশন মৌসুম। তাই আপনি চাইলেই বলতে পারেন না, “আমরা এটা অক্টোবরে আয়োজন করব”। আর (অন্যত্র সরিয়ে নেওয়াও যাবে না কারণ) এত অল্প সময়ের মধ্যে সব সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে কোনো কিছু আয়োজন করার মতো জায়গা পৃথিবীতে খুব কমই আছে।’
তবে এখনই হাল ছেড়ে দিচ্ছেন না পাউন্ড। তারা বাতিলের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আরও দুই থেকে তিন মাস অপেক্ষা করবেন। সেক্ষেত্রে অলিম্পিক এ বছর আদৌ আয়োজিত হবে কি-না তা নিশ্চিত হতে অপেক্ষা করতে হবে আগামী মে পর্যন্ত।
মাস দুয়েক আগে জাপানের নিকটবর্তী চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ শুরু হয়। এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী প্রায় ৮০ হাজারের বেশি মানুষ এতে আক্রান্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ২ হাজার ৭০০’র বেশি। চীন ছাড়িয়ে আরও ৪২টি দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে।