ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ভোট শেষ হয়েছে গত শনিবার। ভোটে প্রার্থীদের পোস্টারে ছেয়ে গিয়েছিল ঢাকা। এসব পোস্টারের আবার বেশিভাগই ছিল প্লাস্টিক দিয়ে মোড়ানো। নিয়মানুসারে ভোটের এই বর্জ্য অপসারণের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের হলেও আশঙ্কা ছিল কাজটি যথাযথভাবে করা না হলে ঢাকার পরিবেশ দূষণের কারণ হতে পারে এসব পোস্টার। তবে এই বর্জ্য অপসারণে এগিয়ে এসেছে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশন। শুধু অপসারণই নয়, পোস্টার বা লিফলেটগুলো ভাগাড়ে না ফেলে সেগুলো ফের কাজে লাগাতে চাইছে সুবিধাবঞ্চিতদের নিয়ে কাজ করা সংগঠনটি। এসব পোস্টার-লিফলেট দিয়ে তারা সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের লেখার খাতা, ঠোঙা ও প্যাকেট বানানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
গতকাল পর্যন্ত ভোটের পরের দুদিনে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে অপসারণের পর বস্তা বস্তা পোস্টার সংগ্রহ করেছে তারা। সেগুলো দিয়ে ইতিমধ্যে খাতা তৈরির কাজও শুরু করেছেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির সদস্যরা।
বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের ঢাকা শাখার প্রধান সালমান খান দেশ রূপান্তরকে বলেন, ‘আমরা চাচ্ছি এ পোস্টারগুলোকে নানাভাবে সুবিধাবঞ্চিত কাজে লাগানো। মূলত এ নির্বাচনে তিন ধরনের পোস্টার দেখা গেছে। যে পোস্টারের একপাশ সাদা সেগুলো দিয়ে আমরা তৈরি করব এতিম শিশুর খাতা, আর প্লাস্টিকের পোস্টারগুলো দিয়ে প্যাকেজ করা হবে সুবিধাবঞ্চিত মানুষের শীতের কাপড় যা পরবর্তী সময়ে তাদের বিতরণ করা হবে। আর পোস্টার বাঁধা দড়িগুলো কাজে লাগানো হবে খাবার প্যাকেজিংয়ের কাজে।’
তিনি জানান, ঢাকার এসব নির্বাচনী বর্জ্য যতদিন না পর্যন্ত পুরোপুরি অপসারণ করা যাচ্ছে তাদের সদস্যরা ততদিনই কাজ করে যাবে।
ফাউন্ডেশনের স্বেচ্ছাসেবকরা জানিয়েছেন, এ কাজে তাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন উত্তর সিটি করপোরেশনের নতুন মেয়র আতিকুল ইসলাম ও বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা। অনেক কাউন্সিলর নিজেরাই তাদের কাছে পোস্টার তুলে দিচ্ছেন। বিভিন্ন প্রার্থীরা যোগাযোগ করেছেন। স্বেচ্ছাসেবকরা তা সংগ্রহ করে নিয়ে আসছেন। অব্যবহৃত পোস্টারগুলোও বাসা থেকে নিয়ে আসার জন্য অনেকে ফোন দিচ্ছেন।
পরিবেশবিষয়ক বেসরকারি সংস্থা এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (এসডো) তথ্য মতে, এবার ঢাকা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পোস্টার ও কর্মীদের পরিচয়পত্র মোড়াতেই অন্তত ২ হাজার ৫০০ টন প্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়েছে। এসডোর মহাসচিব ড. শাহরিয়ার হোসেন দেশ রূপান্তরের কাছে বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। উদ্বেগ প্রকাশ করেন আরও অনেকে। তবে বিদ্যানন্দ ফাউন্ডেশনের এ উদ্যোগ পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি সুবিধাবঞ্চিতদের জন্য আশীর্বাদ হয়ে উঠবে।