তীক্ষ্ণধার শিং দিয়ে একটি ষাঁড় গুতো বসিয়ে দিলো প্রতিদ্বন্দ্বী আরেকটি ষাঁড়ের গলায়। গুতো খেয়ে টালমাটাল ষাঁড়টির গলা দিয়ে তখন রক্ত বেরুচ্ছে। আর তখনই ষাঁড় দুটোকে ঘিরে চারদিকে গোল হয়ে দাঁড়ানো কয়েক হাজার মানুষ ফেটে পড়লো আনন্দে, মেতে উঠলো উৎসবে। তালি দিয়ে, চিৎকার করে উৎসাহ জোগালো গুতো দেওয়া ষাঁড়টিকে।
মঙ্গলবার সিলেট সদর উপজেলার সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কের পার্শ্ববর্তী ঘোপাল গ্রামের মাঠে গিয়ে দেখা যায় এমন দৃশ্য। এই মাঠে মঙ্গলবার স্থানীয় এলাকাবাসী আয়োজন করে ষাঁড়ের লড়াইয়ের। গৃহপালিত জন্তুদের এই হিংস্র লড়াই উৎসবের আমেজে উপভোগ করে স্থানীয় বাসিন্দারা।
লড়াইয়ে অংশ নিতে সকালেই দূর দূরান্ত থেকে নিজেদের ষাঁড় নিয়ে হাজির হন সবাই। বিরাট চেহারার একেকটা ষাঁড়। কোনোকোনোটির গলায় কাগজের ফুলের মালা। কোনটির পেটে লাল কাপড় বাঁধা। লড়াইও শুরু হয় সকাল থেকে। চলে দিনভর। আর এ লড়াইয় দেখতে জড়ো হন আশপাশের গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরাও এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাইলেন না। নানা পণ্যের পসরা নিয়ে বসে যান চারপাশে। ফলে ষাঁড়ের লড়াই রীতিমত গ্রাম্যমেলায় রূপ নেয়।
লড়াইয়ের আয়োজক কমিটির সদস্য মাসুক মিয়া বলেন, এবারের লড়াইয়ের প্রধান আকর্ষণ ছিলো দুটি মোটর সাইকেল। লিডার ৬ ও চাঁনতারা নামের দুটি ষাঁড় লড়াইয়ে জিতে এই পুরষ্কার দুটি জিতে নেয়।
মোট ৫০টি লড়াইয়ে একশ’টি ষাঁড় অংশ নেয় জানিয়ে তিনি বলেন, অংশগ্রহণকারী সকলকেই পুরষ্কার প্রদান করা হয়েছে।
বিশ্বনাথের লামাকাজি থেকে লড়াইয়ে নিজের ষাঁড় নিয়ে এসেছেন আব্দুল হাকিম। তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে লড়াইয়ে অংশ নিতে আমি এই ষাঁড় নিয়ে যাই। কেবল লড়াইয়ে অংশ নেওয়ার জন্য আমি এই ষাঁড়কে বিশেষভাবে লালন পালন করি। এর খাওয়া-দাওয়ার আলাদা যত্ন নেই। লড়াইয়ের জন্য প্রশিক্ষণও প্রদান করি।