সাপ্তাহিক ভোরের আলো’র মন্ট্রিয়ল ব্যুরো প্রধান মাহমুদুল হাসান রুবেল তার কর্মক্ষেত্র DHL Express এর Employee of the year-2019 নির্বাচিত হয়েছেন। এটা DHL Express এর কর্মকর্তাদের জন্য অস্কারের পুরষ্কারের মতো। সারা বিশ্বের ৩.২ মিলিয়ন সার্টিফাইড ইন্টারন্যাশনাল স্পেশিয়ালিস্ট থেকে প্রথমে তার নিজের স্টেশন থেকে নমিনেশন পেতে হয়। তারপর কান্ট্রি হেড অফিসে কান্ট্রি সিইও এবং এইচ আর হেডদের নিয়ে একটি কমিটি সেই নমিনেশন থেকে টপ ৩২ জন চ‚ড়ান্ত করেন। তারপর প্রত্যেককে আধা ঘণ্টার উপর ইন্টারভিউ নেয়া হয়। তারপর চড়ান্ত করা হয় প্রত্যেকটা দেশের Employee of the year. কানাডা থেকে ১৮০১ জন সার্টিফাইড ইন্টারন্যাশনাল স্পেশিয়ালিস্ট থেকে ১৩১ জন নমিনেশন পান। সেখান থেকে ৮ জন Employee of the year-201 নির্বাচিত হন। এই আটজনকে ২০১৯ সালের কানাডা ডিএইচএল এর সুপারস্টার বলে ঘোষণা দিয়েছেন কান্ট্রি সিইও এন্ড্রু উইলিয়ামস। এই আটজন উত্তর আমেরিকাতে কানাডার হয়ে প্রতিনিধিত্ব করবেন। এ বছরের মার্চ মাসে মেক্সিকোতে গালা রাউন্ডে পুরস্কৃত করা হবে তাদের। মাহমুদুল হাসান রুবেল মেক্সিকোর গালা রাউন্ডে অংশ নিবেন। আর কুইবেক প্রদেশ থেকে একমাত্র সার্টিফাইড ইন্টারন্যাশনাল স্পেশিয়ালিস্ট হিসেবে তিনি প্রতিনিধিত্ব করবেন।
এ অর্জন নিয়ে তিনি জানান, সততার সাথে ভালোবেসে যেকোন কাজ করলে তার মূল্যায়ন হবে। আমি নিজেকে প্রমাণ করতে পেরেছি বলে তা অর্জন করতে পারলাম। আমি ডিএইচএল এক্সপ্রেস এ ডেঞ্জারাস গুডস ইন্সপেক্টর এবং এয়ারক্রাফট লোড প্লানার হিসেবে কাজ করছি। গত ডিসেম্বরে আমি অন্যান্য ইন্সপেক্টর থেকে তিনগুণ বেশি ডেঞ্জারাস গুডস এক্সপোর্ট করি নির্ভুলভাবে যা ম্যানেজমেন্টকে অবাক করে দেয়। আমাকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল কিভাবে সম্ভব এটা ? আমার উত্তর ছিলো, আমার একটা ফটোজেনিক মেমরি আছে। তাই খুব সহজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারি।
আমাকে ইন্টারভিউতে প্রশ্ন করা হয়েছিল, কাস্টমারদের সমস্যা এতো সুন্দরভাবে সমাধান করো কিভাবে ? আমি উত্তরে বলেছিলাম, আমার পড়ালেখা এবং বড় হয়ে উঠা বাংলাদেশে। যে দেশের মানুষ সারা বছরই বিভিন্ন রকম প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে যুদ্ধ করে বড় হচ্ছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন সমস্যার মধ্যে যেতে হয়েছে আমাদের। পরিবার, সমাজ প্রতিটি ক্ষেত্রেই সমস্যা সমাধান করেই বড় হতে হয়েছে আমাকে। তাই কাস্টমারের সমস্যা সমাধানে এফোর্ট দিতে কোন সমস্যা হয় না।
আমাকে আরেকটা প্রশ্ন করা হয়েছিল কর্মক্ষেত্রে আমার বিশেষ গুণাবলী কি ? আমার উত্তর ছিলো, ক্রিকেট খেলায় আমি অলরাউন্ডার এবং ফুটবল খেলতাম মিডফিল্ডে। তাই কর্মক্ষেত্রে আমি অলরাউন্ডার ভূমিকা পালন করি। এক্সপোর্ট অপারেশনের প্রত্যেকটা সেকশনের জ্ঞান আমার আছে যা আমার স্টেশনের আর কারো নেই। এয়ারক্রাফট লোড প্লান, ডেঞ্জারাস গুডস হ্যান্ডেলিং ছাড়াও প্রতিটি ফ্লাইট মুভমেন্ট এর উপর আলাদা দক্ষতা আছে এবং একই সাথে তিনটা কাজও অনেকবার করেছি মাল্টি টাস্ক করার দক্ষতা থাকার কারণে। এক্সপোর্ট অপারেশনের যে সেকশনই দেখি স্লো হয়ে যায় যেখানে আমি হাজির হই। তাই বিমান অনটাইম কানাডা ত্যাগ করতে পারে। ফুটবলের মিডফিল্ডের মতো কাজেও আমার কোন নির্দিষ্ট কোন পজিশন নিয়ে বসে থাকি না। আর সেটার কারণে সবাই আমার অভাব অনুভব করে আমি কাজে না আসলে। এ গুণাবলীর কারণেই আমার স্টেশন আমাকে মনোনয়ন দিয়েছে। পাশাপাশি আমার প্রত্যেকটা সহকর্মী এজন্য আমাকে পছন্দ করে।