নতুন কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়া মাশরাফি বিন মর্তুজাকে ঘটা করে বিদায় দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান। কিন্তু মাশরাফি বলছেন, এক সময় মাঠ থেকে বিদায়ের কথা ভাবলেও এখন এমন কোনো আয়োজনের আর প্রয়োজন দেখেন না তিনি।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের কাছে হেরে শেষ হয়েছে মাশরাফির ঢাকা প্লাটুনের বিপিএল। আগের ম্যাচে চোট পাওয়ার পর এদিন হাতে ১৪ সেলাই নিয়ে খেলতে নেমেছিলেন ঢাকা অধিনায়ক। কিন্তু জেতাতে পারেননি দলকে।
আগের দিন বোর্ড সভায় ঠিক হয় নতুন বছরের চুক্তিতে মাশরাফির না থাকা। নতুন কাউকে সুযোগ দিতে তিনি নিজেই এই চুক্তিতে থাকতে চাননি বলে জানিয়েছিলেন বোর্ড প্রধান। সেদিনই গণমাধ্যমে বিসিবি সভাপতি বলেছিলেন, মাশরাফি চাইলে তাকে বিদায় দিতে সম্ভাব্য সেরা আয়োজন করবে বিসিবি।
ক্রিকেট খেলা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় বাংলাদেশের সর্বশেষ ওয়ানডে অধিনায়ক বলছেন, বর্ণাঢ্য আয়োজনে বিদায় নেওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই তার, ‘ক্রিকেট বোর্ডে কালকের দিন পর্যন্ত চুক্তিবদ্ধ ক্রিকেটার ছিলাম। আজ (রবিবার) থেকে আর নেই। আমি সব সময় চিন্তা করি ক্রিকেট বোর্ড খেলোয়াড়দের অভিভাবক। তাদের বিপক্ষে যাওয়াকে আমি কখনোই আমার ক্যারিয়ারের গর্ব মনে করিনি এবং কখনো মনেও করি না। ক্রিকেট বোর্ডকে আন্তরিক ধন্যবাদ যে ক্রিকেট বোর্ড চেয়েছে আমার বিদায়ী ম্যাচ বা অবসরের বিষয়ে চিন্তা করার জন্য। আমি পরিষ্কার বার্তা দিয়েছি, আমার ইচ্ছা নাই। তবে যদি কখনো সুযোগ আসে, তাহলে দেখা যাবে। আবার কার কাছ থেকে নেব সেটাও কথা। আমার কোনো ইচ্ছা নাই।’
খেলা চালিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা মাশরাফির। তবে সেটা যে জাতীয় দলই, এমন না, ‘আমি তো আপনাদের বলেছি, আমি খেলছি। বারবার আপনারাই আমার খেলাটা নিয়ে আসছেন জাতীয় দলে। বারবার বলছি, জাতীয় দল কেন্দ্র করেই কেউ ক্রিকেট খেলে না। সামনে যে খেলা (ঘরোয়া লিগ) আসবে, সেটাই উপভোগ করব। জাতীয় দলের চিন্তা যারা করছে, বিসিবিতে যারা আছে তারা চিন্তা করবে।’
মাঠ থেকে অবসর না নেওয়ার রীতিতে বাংলাদেশের অন্য সাবেক খেলোয়াড়দের উদাহরণ টেনে মাশরাফি বলছেন, আগে ভাবলেও এখন আর মাঠ থেকে বিদায় প্রয়োজনীয় না তার কাছে, ‘আমার মনে হয়, আমার অতোটুকু স্বাধীনতা তো আছে যে আমি খেলতে চাই। কারও জোর করায় তো আমি আর কিছু করব না। বাংলাদেশে অনেক খেলোয়াড় আছে যারা মাঠ থেকে অবসরে যায়নি। আমার থেকেও বড় খেলোয়াড় আছে। হাবিবুল বাশার সুমন তো বাংলাদেশের হয়ে সংকটের সময়ে সব সময় রান করেছে। সেও মাঠের থেকে অবসরে যায়নি। সুজন ভাই (খালেদ মাহমুদ) হয়তো করতে পেরেছে। এছাড়া তো বিরল ঘটনা। একটা সময় হয়তো ভাবতাম যে মাঠ থেকে করব কি করব না (অবসর)। এখন মনে হচ্ছে, প্রয়োজন নেই।’