রাজাকারের তালিকা নিয়ে জাতীয় সংসদে নিজ দলের সংসদ সদস্যদের প্রশ্নের মুখে পড়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী একেএম মোজাম্মেল হক।ত্রুটিপূর্ণ এ তালিকা প্রকাশে মন্ত্রী তার দায় এড়াতে পারেন না বলে দাবি করেছেন তারা।
আজ বৃহস্পতিবার (১৬ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদের সম্পূরক প্রশ্ন-উত্তর পর্বে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন বলেন, “রাজাকারের ত্রুটিপূর্ণ তালিকা প্রকাশে সরাসরি তার মন্ত্রণালয়ের দায় নেই বললেও, তালিকার সত্যতা যাচাই না করার দায় এড়াতে পারেন না। সেটি যেখান থেকেই সংগ্রহ করা হোক না কেন”।
রতন জানান, রাজাকারের তালিকায় বেশকিছু অসঙ্গতি থাকায় সরকারের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে পড়েছে।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের আগেই প্রকৃত রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করা সম্ভব কিনা?
এর উত্তরে, ভুল স্বীকার করে ত্রুটিপূর্ণ রাজাকারের তালিকা প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে বলে জানান মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী একেএম মোজাম্মেল হক।
তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে যাতে ভুলের পুনরাবৃত্তি না হয়, সেজন্য সবার সাহায্য নিয়ে যাচাই-বাছাই করে তালিকা প্রকাশ করা হবে”।
পরে সরকারি দলের আরেক এমপি মো. ফরিদুল হক খানের এক প্রশ্নের জবাবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী জানান, তার মন্ত্রণালয় এই তালিকা প্রণয়ন করেনি। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের চাহিদার ভিত্তিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ এটি পাঠিয়েছে।
“এই তালিকা হুবহু মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রকাশ করেছে। এই তালিকা যেহেতু মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় তৈরি করেনি, এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন উঠলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিতে পারে”, বলেন মোজাম্মেল হক।
আওয়ামী লীগের আরেক এমপি মেজর (অব) রফিকুল ইসলাম জানান, যেহেতু তালিকা মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় প্রকাশ করেছে, তাদের এর দায় নিতে হবে।
মন্ত্রী প্রকৃত রাজাকারের তালিকা সংগ্রহ করতে পারেননি জানিয়ে রফিকুল ইসলাম বলেন, “তিনি এটি করার সামর্থ্যই রাখেন না। গত পাঁচ বছর ধরেই একই কথা শুনছি তার কাছ থেকে”।
গণফোরামের এমপি সুলতান মুহাম্মদ মনসুর আহমেদ তার সম্পূরক প্রশ্নে মুজিব বর্ষে দেশকে রাজাকারের তালিকা প্রকাশ করে মন্ত্রীকে দেশে বিভক্তি তৈরি না করার আহ্বান জানান।
এর উত্তরে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী বলেন, “আমি তার এই উপদেশ বিবেচনা করব”।
গত ১৫ ডিসেম্বর ১০ হাজার ৭৮৯ জন রাজাকারের একটি তালিকা প্রকাশ করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। তালিকাটিতে বেশ কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদের নাম থাকায় বিতর্কের মুখে পড়ে এটি। পরে গত ১৮ ডিসেম্বর তালিকাটি স্থগিত করে মন্ত্রণালয়।