২৪ বছর পর মাকে দেখতে দেশে ফিরে সড়ক দূর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন আমেরিকা প্রবাসী রুহুল আমিন (৩৮)।
টানা ২৪ বছর আমেরিকা থাকার পর সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসের বৈধ অনুমোদন (গ্রিন কার্ড) পান সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার বাসিন্দা রুহুল আমিন। গ্রিন কার্ড পাওয়ার পর মাকে দেখতে এবং বিয়ে করার উদ্দেশ্যে দেশে ফিরেন তিনি। কিন্তু, দেখা হলো না মায়ের সঙ্গে। বিমানবন্দর থেকে মাইক্রোবাসে বাড়ি যাওয়ার পথে ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই মারা যান রুহুল।
গতকাল (১৫ জানুয়ারি) রাতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলার শশইয়ে পাথরবাহী একটি ট্রাকের সঙ্গে মাইক্রোবাসটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
দুর্ঘটনায় রুহুলের বাবা ও ছোট ভাইসহ পাঁচজন আহত হয়েছেন। তারা হলেন, রুহুলের বাবা আলিম উদ্দিন, ছোট ভাই নুরুল আমিন ও ফখরুল আমিন, মামাতো ভাই এমরান আহমদ এবং বিয়ানীবাজার পৌরশহরের পণ্ডিতপাড়া এলাকার বাসিন্দা মাইক্রোবাসের চালক বাদশাহ মিয়া।
আহতদের মধ্যে নুরুল আমিন ও গাড়ির চালক বাদশাহ মিয়ার অবস্থা আশংকাজনক। তাদেরকে প্রথমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ও পরে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল বিশ্বরোড খাটিহাতা হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. গিয়াস উদ্দিন দুর্ঘটনায় হাতহতের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আহত স্বজনদের বরাত দিয়ে ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো রুহুল আমিন বিয়ানীবাজার উপজেলার কুড়ারবাজার ইউনিয়নের খশির নামনগর এলাকার আলিম উদ্দিনের বড় ছেলে। রুহুল বুধবার আমেরিকা থেকে দেশে ফেরেন। ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বাবা ও ভাইসহ স্বজনরা তাকে নিয়ে মাইক্রোবাসে করে বাড়ি ফিরছিলেন। পথিমধ্যে শশই এলাকায় পাথরবাহী ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে চালকের পাশের আসনে বসা রুহুল ঘটনাস্থলেই মারা যান।
হাইওয়ে পুলিশের এই কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মাইক্রোবাসের চালক ক্লান্ত এবং ঘুমের ঘোরে থাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।
নিহত রুহুল আমিনের স্বজনরা জানিয়েছেন, পরিবারের পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে রুহুল আমিন সবার বড়। খায়রুল আমিন নামের এক ভাই দুই বছর আগে আমেরিকায় গেছে। ছোট ভাই নুরুল আমিন ও ফখরুল আমিন এবং ছোট বোন লেখাপড়া করছে। কিশোর বয়সে আমেরিকা যান রুহুল আমিন। গ্রিন কার্ড পেতে দীর্ঘ ২৪ বছর সময় কেটে গেছে প্রবাসে।