রাজনীতিতে আলোচনা, সমালোচনার ঝড় তুললেও ব্যক্তিগত জীবনে জয়নাল হাজারী ‘চিরকুমার’। আর বিয়ে না করার পেছনে `বিজু’ নামের এক তরুণীর সঙ্গে জয়নাল হাজারীর বিচ্ছেদের কাহিনীর কথা মুখে মুখে। তিনি তার নিজের লেখা বইতেও বিজুকে নিয়ে লিখেছেন। তার লেখা ‘বিজুর বিচার চাই’ গ্রন্থটি ব্যাপক আলোচনায় এসেছিল।
প্রশ্ন শুনে হাজারী সাহেব বেশ রাগান্বিত। সব জায়গায় কেনো তার ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করা হয়? আর সব জায়গায় নাকি তিনি এই প্রশ্নের উত্তর দিতে দিতে বিরক্ত। কিছুক্ষন রাগ ঝাড়লেন। তারপর ঘটনাটি জয়নাল হাজারি ফের বললেন, ‘আমি যখন ফেনী কলেজের ছাত্র ছিলাম। সেও ফেনী কলেজের ছাত্রী ছিলেন। সে গান গাইতো। আমি গীতি নকশা করতাম। আমি স্টেজে কথা বলতাম। সে গান গাইতো। এভাবেই আমাদের ভালো সম্পর্ক ও প্রেম হয়। কিন্তু যুদ্ধের সময় আমি যখন যুদ্ধে চলে গেলাম। তখন তার বাপসহ, তার বাবা দক্ষিণপন্থী ছিলেন। তারা সোনাদিয়া এলাকায় আত্মগোপন করে। সেখানে একটা রাজাকার, অনেকটা জোর করেও বলা যায় তাকে বিয়ে করে ফেলে। বিজুর সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল সে আমাকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করবে না। আমিও তাকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করবো না। কিন্তু বোঝা গেল সে খুব এটা প্রেশারে পড়ে তাকে বিয়ে করে। যুদ্ধের সময়ই খবর পাচ্ছিলাম যে বিজুর হয়ে গেছে। মুক্তিযুদ্ধ থেকে ফিরে আমি তাকে ছিনিয়ে নিয়ে আসতে পারতাম। যেহেতু আমার দল ছিল ক্যাডার ছিল। তখন কোন প্রশাসনের ধার ধারতে হত না। আমিই ফেনী পরিচালনা করি। আমরা যে ওয়াদা করেছিলাম। সেটা সে রাখেনি। পরবর্তীতে এর কোন প্রতিকারও সে করেনি। কেন সে ওয়াদা ভঙ্গ করলো সেটার জন্যই আমি বিচার চেয়েছি। বিজুর সঙ্গে পরবর্তীতে কখনো আমার কথা্ হয়নি। সে একটা স্কুলে মাস্টারি করতো। সেখান থেকে রিটার্ড করেছে। রিটার্ড অনুষ্ঠানে আমাকে অতিথি করার জন্য স্কুল থেকে ফোন দিয়েছে। কিন্তু আমি যাইনি। আর এজন্যই আমি চিরকুমার।’
বিজুর বর্তমান অবস্থা নিয়ে বলেন,‘বিজুর স্বামী মারা গেছে। ওর একটা ছেলে কানাডা থাকে। সবাই বলে জয়নাল হাজারির ছেলে। যেহেতু বিয়েরে আগে বিজুর সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল। কিন্তু এটা পুরোপুরিই মিথ্যে যে সে আমার ছেলে। কারণ এমন কিছুই আমাদের ছিল না।’
তিনি সবসময় কেন সাদা পোষাক পড়েন তা নিয়ে বলেন,‘আমি ছোটবেলা থেকেই সুভাষ বসুর অনুসারী। সে সাদা পছন্দ করতেন। আমিও তাই সাদা পছন্দ করি।’