জঙ্গি সংগঠন আইএসের শীর্ষ নেতা আবু বকর আল বাগদাদিকে হত্যার অভিযান হোয়াইট হাউজে বসে সরাসরি সম্প্রচার দেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বলেছেন, ‘মনে হচ্ছিল যেন সিনেমা দেখছি।’
রোববার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণে মার্কিন সামরিক বাহিনীর ওই অভিযানের বিষয়ে জানাতে গিয়ে ট্রাম্প এমনই অনেক অতিরিক্ত বর্ণনা দিয়েছেন, যা সাধারণত মার্কিন প্রেসিডেন্টরা করেন না।
তিনি জানান, মার্কিন প্রশাসন মাসখানেক আগে থেকেই বাগদাদির অবস্থান সম্পর্কে নানারকম তথ্য পেতে শুরু করেছিল। গোয়েন্দা কর্মকর্তারা তার সঠিক অবস্থান সম্পর্কে দু’সপ্তাহ আগে নিশ্চিত হন। কিন্তু ট্রাম্পকে অভিযানের ব্যাপারে জানানো হয় মাত্র তিন দিন আগে।
শনিবার ভার্জিনিয়ায় এক রাউন্ড গলফ খেলার পর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে হোয়াইট হাউজে পৌঁছান প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ৫টার দিকে (সিরিয়া স্থানীয় সময় রাত ১১টা) তিনি হোয়াইট হাউজের সিচুয়েশন রুমে ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স, প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার, জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রায়েন এবং বেশ কয়েকজন গোয়েন্দা কর্মকর্তাকে নিয়ে বসেন।
সেখানে বসেই তারা সামরিক বাহিনীর সদস্যদের কাছে থাকা ক্যামেরার মাধ্যমে টিভি মনিটরে দেখতে থাকেন বাগদাদিকে ধরার জন্য সিরিয়ার সময়ে রাতভর চলা বিশেষ অভিযান।
সিচুয়েশন রুমের এমনই একটি মুহূর্তের ছবি টুইটারে পোস্ট করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।
অনেকটা এমনই একটি ছবি ২০১১ সালে দেখেছিল বিশ্ব। একই ঘর, একই পরিস্থিতি, শুধু টার্গেট আর ছবির চরিত্রগুলো আলাদা।
২০১১ সালের মে মাসে আল-কায়েদার শীর্ষ নেতা ওসামা বিন লাদেনকে ধরতে পাকিস্তানের অ্যাবোটাবাদে যখন ইউএস নেভি সিলের বিশেষ দল গিয়েছিল, সেই দলের সঙ্গেও ছিল ক্যামেরা।ডোনাল্ড ট্রাম্প-সিনেমা দেখছি-বাগদাদি
তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনসহ অনেকেই ওই সময় সিচুয়েশন রুমে বসে গভীর উৎকণ্ঠা ও মনোযোগ দিয়ে দেখছিলেন বিন লাদেনের ঘাঁটিতে অভিযান চালানোর দৃশ্য।
ওই দিনের ছবিটিও ব্যাপক প্রচার পেয়েছিল। তবে পার্থক্য হলো, পরের ছবিটি থেকে আগের ছবির চরিত্রগুলোর চেহারায় আবেগ-উৎকণ্ঠার প্রকাশ বেশি দেখা গেছে।
যে দলটিকে বাগদাদিকে ধরতে পাঠানো হয়েছিল সেটি মার্কিন সামরিক বাহিনীর একটি বিশেষ ইউনিট, যার নাম ডেল্টা ফোর্স। এদেরকে মূলত সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে পাঠানো হয় এবং অতি গুরুত্বপূর্ণ টার্গেটদের পেছনে পাঠানো হয়।