বিসিবির সঙ্গে চুক্তির ধারা ভঙ্গ করে একটি টেলিকম কোম্পানির সঙ্গে ব্যক্তিগত স্পন্সরশিপ সই করে নতুন করে ঝামেলা বাঁধিয়েছেন সাকিব আল হাসান। ক্রিকেটারদের ধর্মঘট শেষ হওয়ার পর এই খবরটি ভারত সফরের প্রস্তুতি ছাপিয়ে চলে এসেছে মূল আলোচনায়। বিষয়টি নিয়ে গত দুদিনে বিসিবি প্রধান নাজমুল হাসান জানিয়েছেন কড়া প্রতিক্রিয়া। এমন কাজ কেন করতে গেলেন, জানতে চেয়ে চিঠিও দেওয়া হয়েছে সাকিবকে। আইনি নোটিশ যাচ্ছে ওই টেলিকম কোম্পানির কাছেও।
খেলোয়াড়দের সঙ্গে বিসিবির চুক্তিতে যা আছে, যা ভঙ্গ করেছেন সাকিব
– কোনো টেলিকম কোম্পানির সঙ্গে বিসিবির চুক্তিভুক্ত কোনো ক্রিকেটার স্পন্সরশিপ এন্ডোর্সমেন্টে যেতে পারবেন না। (মূলত টাইটেল স্পন্সর হিসেবে রবি বিসিবির সঙ্গে যুক্ত হওয়ার পর এমন ধারা নিয়ে আসা হয়। রবির সঙ্গে বিসিবির চুক্তি শেষ হওয়ার পরও সেই ধারা এখনো বহাল রয়েছে।)
– সাংঘর্ষিক নয় এমন ক্ষেত্রে অন্য কোনো কোম্পানির সঙ্গে কোনো ক্রিকেটার ব্যক্তিগত স্পন্সরশিপ সই করতে গেলেও বিসিবির অনুমোদন লাগবে।
উপরের এই দুটো নিয়মের কোনোটিই অনুসরণ করেননি সাকিব। অর্থাৎ বিসিবি চাইলে সাকিবের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও এখতিয়ার রাখে। বিসিবি সভাপতি শনিবার (২৬ অক্টোবর) গণমাধ্যমে বলেন, ‘আমাদের আইন অনুযায়ী সে এটা করতে পারে না। এটা টেলিকম কোম্পানিও জানে, সেও (সাকিব) জানে। ওদের (ক্রিকেটারদের) সঙ্গে তো আমাদের চুক্তি আছে। সে চুক্তি অনুযায়ী এটা করা যায় না।’
‘এখন আমরা তাকে (সাকিবকে) চিঠি দিচ্ছি। তাকে তো আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে, কেন সে এটা করল।’
কি করবে বিসিবি
বিসিবি আপাতত সাকিবের আনুষ্ঠানিক উত্তরের অপেক্ষা করবে। এরপরই তারা নেবে ব্যবস্থা। এর আগে আরেকটি টেলিকম কোম্পানি বাংলালিংকের সঙ্গে চুক্তি করতে গিয়েও পারেননি সাকিব। এবার গ্রামীণফোনের সঙ্গে চুক্তি সই করেও বিসিবির এই শর্তের কারণে সরে আসতে হতে পারে তাকে। উদ্ভুত পরিস্থিতিতে এই সম্ভাবনাই সবচেয়ে বেশি।
গ্রামীণফোনের সঙ্গে চুক্তি বেআইনি হলে, সেই চুক্তি এমনিতেই চালিয়ে যাওয়ার উপায় থাকবে না সাকিবের। তবে সব জানার পরও দুটো নিয়ম ভঙ্গ করায় সাকিবের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ থাকছে বিসিবির। আবার, নিয়মবহির্ভূত চুক্তি থেকে সরে আসলে, সাকিবকে কেবল সতর্ক করে ব্যাপারটি মিটিয়েও ফেলতে পারে দেশের ক্রিকেটের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা।
সাকিবের চুক্তিভঙ্গ নিয়ে বিসিবি শেষ পর্যন্ত কোন পথে হাঁটে, সেটাই দেখার বিষয়।
সাকিব কি করতে পারেন
চুক্তির নিয়ম ভাঙায় কিছুটা ব্যকফুটেই আছেন সাকিব। তিনি গ্রাফীনফোনের সঙ্গে ব্যক্তিগত স্পন্সরশিপ থেকে সরে এসে বিসিবির কাছে দুঃখপ্রকাশ করলেই মিটে যেতে পারে সব কিছু। সাকিবের হাতে বিকল্প আছে আরও। চাইলে তিনি আইনি লড়াই করতে পারেন। কিংবা বিসিবির সঙ্গে কেন্দ্রীয় চুক্তি বাতিল করে স্বাধীন থাকতে পারেন। বাংলাদেশের বাস্তবতায় শেষ দুটোর কোনটিই তিনি করবেন না বলেই ধারনা করা হয়।