লিখেছেন মাহমুদুল হাসান রুবেল
কানাডার ৪৩তম জাতীয় নির্বাচনের (ফেডারেল নির্বাচন) ভোটগ্রহণ শেষ হলো । নির্বাচনে এক হাজার ৭৫৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। তাঁদের মধ্যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত প্রার্থী ছিলেন খালিশ আহমেদ, ফাইজ কামাল ও আফরোজা হোসেন। বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বের প্রবাসী বাঙালিরা খবর রাখছিলেন তাদের নির্বাচনী ফলাফলের দিকে। হতাশ হতে হয়। এবারও পাওয়া হলো না বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত কোন এমপি।
গত সাধারণ নির্বাচনে (২০১৫) বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত একমাত্র প্রার্থী ছিলেন খালিশ আহমেদ। এনডিপির পক্ষে ক্যালগেরি সিগন্যাল হিল আসন থেকে অংশ নিয়ে খালিশ আহমেদ সেবার হেরে যান কনজারভেটিভ পার্টির রন লিপার্টের কাছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। কনজারভেটিভ পার্টির রন লিপার্ট ৩৮৬৯১ (৬৯.৪%) ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। দ্বিতীয় হয়েছেন লিবারেলের গাদা এলাট্যারাস ৮৭০১ (১৫.৬%) ভোট পেয়ে। খালিশ আহমেদ ৪৮৩৯ (৮.৭%) ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থান নিয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে।
এনডিপি এবার আরেক বাংলাদেশি-কানাডিয়ান ফাইজ কামালকে নতুন করে মনোনয়ন দিয়েছিল অন্টারিওর স্কারবোরো সেন্টার আসনে। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ১৮৯ সেন্টারের মধ্য থেকে ১৭৯ সেন্টারের প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী লিবারেলের সালমা জাহিদ ২৪৪৪২ (৫৫.১%) ভোটে জয়ী হয়েছেন। কনজারভেটিভ এর ইরশাদ চৌধুরী ১০১৭৪ (২২.৪%) ভোট পেয়ে দ্বিতীয় এবং এনডিপির ফাইজ কামাল ৫২৬২ (১১.৬%) ভোট পেয়ে তৃতীয় হয়েছেন।
এ ছাড়া ক্ষমতাসীন লিবারেল পার্টি থেকে মনোনয়ন পেয়েছিলেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আফরোজা হোসেন। টরন্টো থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরের শহর অশোয়া থেকে নির্বাচনে লড়েন তিনি। লিবারেল পার্টি থেকে এই প্রথম কোনো বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত ফেডারেল নির্বাচনে এমপি প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেয়েছিলেন। তিন বাংলাদেশী কানাডিয়ান এর মধ্যে তার জয়ী হওয়ার সম্ভাবনা ছিলো সবচেয়ে বেশি। কিন্তু তিনিও হতাশ করলেন। তবে অন্য দুই বাংলাদেশী কানাডিয়ান থেকে তিনি বেশি ভোট পেয়েছেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ২৪০ সেন্টারের মধ্য থেকে ২৩৭ সেন্টারের প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী তার আসনে জয়ী হন কনজারভেটিভ এর কলিন ক্যারি ২৩২৭৯ (৩৮.৬%) ভোট পেয়ে। দ্বিতীয় হন এনডিপির শেইলিন প্যানিলো ১৭২৫৩ (২৮.৬%) এবং আফরোজা হোসেন ১৫৩১৭ (২৫.৪%) ভোট পেয়ে তৃতীয় হন। প্রগতিশীল ভোটারদের সমর্থন ভাগ হয়ে যাওয়ার কারণে কনজারভেটিব জয়ী হয় এ আসনে।
বাংলাদেশী কানাডিয়ান এই তিন প্রার্থী পরাজিত হলেও আশার কথা হলো তাদের দেখানো পথ ধরে আগামীতে বাংলাদেশী কানাডিয়ানরা অনুপ্রাণিত হবেন এবং অদূর ভবিষ্যতে আমরা কানাডায় পেয়ে যাবো আমাদের এমপি। এখন দেখার বিষয় কে হবেন সেই ইতিহাস সৃষ্টিকারী বাংলাদেশী কানাডিয়ান ?