হঠাৎ করেই পট পরিবর্তন। বিসিসিআই সভাপতি হওয়ার তালিকায় জোরেসোরে নাম ছিল ব্রিজেস প্যাটেলের। কিন্তু শনিবার রাতে হঠাৎ করেই ভোজবাজির মত উল্টে যায় সব কিছু। ভারতের ক্ষমতাসীন উগ্র হিন্দু জাতীয়তাবদী দল বিজেপির প্রার্থী হিসেবে শেষ পর্যন্ত বিসিসিআইর প্রেসিডেন্ট হিসেবে মনোনীত হন সাবেক অধিনায়ক সৌরভ গাঙ্গুলিই।
জানা গেছে, ব্রিজেস প্যাটেল ছিলেন এন শ্রীনিবাসনের প্রার্থী। সে মতে আলোচনাও চলছিল। কিন্তু বিজেপি সাবেক সভাপতি অনুরাগ ঠাকুরকে দায়িত্ব দেয় নতুন সভাপতি বাছাই করে নেয়ার জন্য। সে হিসেবে অনুরাগ ঠাকুরের পূর্ণ সমর্থন ছিল সৌরভের ওপরই।
যে কারণে সভাপতি মনোনয়নের বৈঠকে পরিস্থিতি পুরো পাল্টে যায় এবং বিজেপির পছন্দেই মনোনয়নটা পেয়ে গেলেন সৌরভ। পুরো ঘটনাটাই সচিত্র গ্রাফ আকারে প্রতিবেদন করেছে কলকাতার প্রভাবশালী পত্রিকা আনন্দবাজার।
সভাপতি হিসেবে এখনও গাঙ্গুলির নামে গ্যাজেট তৈরি হয়নি। তবে, তিনিই এখন মনোনীত। সেই মনোনয়ন পেয়ে বিসিসিআইর প্রেসিডেন্টশিপকে নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নিচ্ছেন তিনি।
মনোনয়ন নেয়ার পর মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সোজাসুজি বলে দিয়েছেন, ‘বোর্ডের ভাবমূর্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাই এই সময়ে প্রেসিডেন্ট হতে পারায় খুশি। কিছু করার জন্য দারুণ সুযোগ পেয়েছি। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হোক বা অন্য যে কোনোভাবেই হোক, এটা মস্ত বড় দায়িত্ব। কারণ, বিসিসিআই বিশ্ব ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় সংস্থা। ভারত হল ক্রিকেটের পাওয়ারহাউস। এই দায়িত্ব তাই রীতিমতো চ্যালেঞ্জিং।’
আনন্দবাজার পত্রিকায় রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে, ‘জল্পনা চলছে বিজেপির হয়ে প্রচারের ব্যাপারে সম্মতি দিয়েই কি হাওয়া নিজের দিকে ঘুরিয়েছেন প্রাক্তন অধিনায়ক?’
আনন্দবাজারের শিরোনাম ছিল, ‘বিজেপির হয়ে প্রচারের শর্তেই কি বোর্ড প্রেসিডেন্ট? সৌরভ বললেন…।’ ওই রিপোর্টে বলা হয়, ‘২০২১ সালের নির্বাচনে বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তাকেই কি তুলে ধরতে চাইছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ? সৌরভ যদিও এহেন জল্পনাকে স্রেফ গ্যালারিতে পাঠিয়েছেন। সাফ বলেছেন, একেবারেই এমন কিছু নয়। কেউই এই ব্যাপারে আমাকে কিছু বলেনি। অর্থাৎ, বিজেপির হয়ে প্রচারের সম্ভাবনার তত্ত্বকে একেবারেই উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।’
কলকাতার আরেকটি অনলাইন কলকাটা২৪*৭ শিরোনাম করেছে, ‘বাংলায় কি বিজেপির মুখ সৌরভ, উত্তর দিলেন অমিত শাহ’। সেখানে লেখা হয়েছে, ‘সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বিসিসিআই সভাপতি হওয়ার থেকেই জল্পনা তুঙ্গে। তাঁর সঙ্গে বিজেপির যোগ থাকার গন্ধ পাচ্ছেন অনেকেই। শোনা যাচ্ছে, অমিত শাহ শিবিরের সঙ্গে বৈঠকের পরই নাকি সৌরভের এই পদ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। যদিও সৌরভ নিজে একথা অস্বীকার করেছেন এবং জানিয়েছেন যে বৈঠকের পরও তিনি জানতেন না যে তিনিই বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন।’
এবার এই বিষয়ে প্রতিক্রিয়া দিলেন খোদ অমিত শাহ। ইন্ডিয়া টুডেকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে যদিও তিনি অস্বীকার করেছেন বিষয়টা। অমিত শাহ জানিয়েছেন, ‘আমি বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট ঠিক করিনি। বিসিসিআইয়ের নিজস্ব প্রক্রিয়াতেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়েছে।’