কেনাকাটার জন্য এক টাকা এখন অচল মুদ্রা, এ সামান্য টাকায় কিছুই কিনতে পাওয়া যায় না এখন। কিন্তু এক টাকায় মানুষকে পেট পুরিয়ে খাইয়ে যাচ্ছেন ভারতের এক বয়োজ্যেষ্ঠ নারী। তাই এক দুই দিন না, টানা দুই দশক ধরে এই কাজ করে আসছেন তিনি।
এনডিটিভি জানায়, তামিলনাড়ুর ৮০ বছরের কমলথল দিনে ৪০০-৫০০ ইডলি বিক্রি করে থাকেন। যার প্রতিটির দাম, ভারতীয় মুদ্রায় এক টাকা মাত্র। প্রতিদিন সাড়ে পাঁচটা থেকে দুপুর পর্যন্ত এই ইডলি বিক্রি করেন তিনি।
ভোরে উঠে মাটির চুলা জ্বালিয়ে এই কাজ সারেন তিনি। আগের দিন রাতে তৈরি করে রাখেন ইডলি বানানোর যাবতীয় জিনিসপত্র। এই বয়সেও টানা পরিশ্রম করে যান এই নারী।
ইডলি হচ্ছে চালের গুঁড়ো ও ডালের মিশ্রণ দিয়ে এক ধরনের পিঠা। দক্ষিণ ভারত থেকে শুরু করে শ্রীলঙ্কার তামিল এলাকায় এই খাবার বেশ জনপ্রিয়। বিশেষ করে সকালের নাশতা হিসেবে ইডলি পিঠার চল বেশি।
২০ বছর ধরে এক টাকা মূল্যেই ইডলি বিক্রি করে আসছেন কমলথল। এই পিঠা বিক্রি করে দিনে তার আয় ২০০ রুপি। সকাল থেকেই তার ছোট দোকানে মানুষের ভিড় লেগে থাকে। অল্প টাকাতে খেতে পেরে সবাই সন্তুষ্ট।
এমন অনেকে আছেন, দীর্ঘ বছর ধরে এখানেই সকালের নাশতা সারেন। এক ক্রেতা জানান, অন্য কোনো দোকানে নাশতা করলে ১০ থেকে ১৫ টাকা চলে যায়। আর এখানে এক টাকা করে কয়েকটি ইডলি খেলেই পেট ভরে যায়। ক্রেতাদের মতে,তার হাতের ইডলি একবার যে খেয়েছে তার পক্ষে কিছুতেই ভোলা সম্ভব নয় তার স্বাদ।
কমলথল বলেন, অনেক মানুষ আছে কম খরচে নাশতা সারতে চায়। বেশি টাকা খরচ করতে পারে না। এমন সব মানুষদের খাইয়ে আমি আনন্দ পাই।
কেন কখনো এক টাকাতেই ইডলি বিক্রি করেন তিনি, এত বছরেও কেন এর দাম বাড়াননি তিনি, এমন প্রশ্নে এই বয়োজ্যেষ্ঠ মুখে হাসি নিয়ে বলেন, কোটিপতি হতে চাইলে এত দিনে তিনি সেটা হতেই পারতেন। কিন্তু এই সাদামাঠা জীবনই তার বেশি পছন্দের।
এ দিকে ৮০ বছর বয়সী এই নারীর এই খাবারের ভিডিও এবং তার প্রতিদিনের ইডলি তৈরির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে পড়ে। সেই ভিডিও শেয়ার করেন ভারতের গাড়ি কোম্পানি মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রার চেয়ারম্যান আনন্দ মাহিন্দ্রা।
ভিডিওটি সহ কমলথলের এই খবর তিনি টুইট করেন। ক্যাপশনে তিনি লিখেন, এত সরল জীবনযাপন সবার আদর্শ হওয়া উচিত। এই দাদিকে দেখছি এখনো কাঠের উনুনে রান্না করছেন। এমনকি কমলথলের ইডলি বিক্রিতে তিনি সহায়তাও করতে চান বলেন, তার সঙ্গে দিতে চান এলপিজি গ্যাস স্টোভ।
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পরে কমলথলকে নানাভাবে সাহায্য করার জন্য অনেকেই এগিয়ে আসতে চেয়েছেন। ভারত পেট্রোলিয়াম করপোরেশন লিমিটেড তাকে একটি গ্যাস স্টোভ উপহার দেয়।