সৌদি আরবের রাষ্ট্রমালিকানাধীন তেল সংস্থা আরামকোর দুটি স্থাপনায় ড্রোন হামলার পর তেল ও গ্যাসের উৎপাদন কমেছে। আজ রোববার বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়।
দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী প্রিন্স আবদুল আজিজ বিন সালমান বলেছেন, হামলার কারণে দিনে অপরিশোধিত তেলের উৎপাদন ৫৭ লাখ ব্যারেল কমেছে, যা সৌদির মোট উৎপাদনের প্রায় অর্ধেক।
ইরানের সঙ্গে আঞ্চলিক উত্তেজনার মধ্যে সৌদি আরামকোর দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় গতকাল শনিবার ড্রোন হামলা হয়। হামলায় আরামকোর দুটি স্থাপনাতেই ভয়াবহ আগুন লাগে। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।
ইরানের মদদপুষ্ট ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা এই হামলার দায় স্বীকার করেছে। হুতি বিদ্রোহীদের ভাষ্য, হামলার জন্য তারা ১০টি ড্রোন ব্যবহার করেছে।
হুতি বিদ্রোহীরা দায় স্বীকার করলেও এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্য করেনি সৌদি কর্তৃপক্ষ। তবে এই হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও হুতি বিদ্রোহীদের দাবি নাকচ করে বলেছেন, ইয়েমেন থেকেই যে ড্রোনগুলো সৌদিতে এসেছে, তার কোনো প্রমাণ নেই।
এক টুইটে পম্পেও বলেন, বিশ্বের জ্বালানি সরবরাহের ওপর এই হামলা নজিরবিহীন।
পম্পেও বলেন, ‘ইরানের চালানো এই হামলার ব্যাপারে প্রকাশ্যে ও দ্ব্যর্থহীনভাবে নিন্দা জানাতে আমরা সব দেশের প্রতি আহ্বান জানাই।’
ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের চাপের মুখে ২০১৫ সালে ইয়েমেনের রাজধানী সানা ত্যাগ করেন প্রেসিডেন্ট মানসুর হাদি। এর পর থেকে দেশটিতে যুদ্ধ চলছে। হাদিকে সমর্থন দিচ্ছে সৌদি আরব। ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট প্রায় প্রতিদিন বিমান হামলা চালাচ্ছে। হুতিরাও প্রায়ই সৌদিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করছে।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলা হয়, গতকাল প্রথম ড্রোন হামলাটি হয় আরামকোর সবচেয়ে বড় তেল পরিশোধনাগার প্ল্যান্ট আবকাইকে। দ্বিতীয় ড্রোন হামলা হয় আরামকোর খুরাইস তেলক্ষেত্রে।
আবকাইক তেল স্থাপনাটি সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলীয় প্রদেশ ধাহরানের ৬০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। আরও ২০০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান খুরাইসের।
সৌদির জ্বালানিমন্ত্রী এক বিবৃতিতে বলেন, হামলার ফলে আবকাইক ও খুরাইস প্ল্যান্টে উৎপাদন সাময়িক বন্ধ হয়ে যায়। আরামকোর মজুত তেল থেকে এই ক্ষতির কিছুটা পূরণ করা হবে।